আপনার ফেসবুক আইডিকে সুরক্ষিত রাখার কয়েকটি গুরুত্বপূণ টিপস

আপনার ফেসবুক আইডিকে সুরক্ষিত রাখার কয়েকটি গুরুত্বপূণ টিপস

আপনি কি আপনার ফেসবুক আইডিকে সুরক্ষিত করতে চান?–তাহলে আমার লেখা আজকের আটিকেলটি আপনার জন্য । আপনারা এই আটিকেলটি পড়ে এবং অনুসরণ করে আপনার ফেসবুক আইডিকে অনেকটা সুরক্ষিত করতে পারবেন । আশা করছি আপনারা সম্পূণ আটিকেলটি পড়বেন । ভালো লাগলে লাইক দিবেন ও কমেন্ট করে আপনার মতামত ব্যক্ত করবেন । তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ।

বতমানে ফেসবুক আইডিকে হ্যাকারদের থেকে নিরাপদ রাখতে হলে অবশ্যয় আপনাকে নিজ দায়িত্বে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে । বতমানে হ্যাকারের সংখ্যাও বেড়ে গেছে । তারা অনেক কৌশলে আইডিকে Access করে নিচ্ছে । তারপর তারা কিছু সাধারণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যার ফলে আপনি আর আইডিকে নিজের দখলে করতে পারছে না । আগে কিছু ফেসবুক বন্ধুদের সাহায্যে এরুপ আইডি ফিরিয়ে আনা যেত । এখন সেটিও বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক কতৃপক্ষ । তাই এখন আমাদেরকেই ফেসবুক আইডির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ।

আপনার ফেসবুক আইডিকে সুরক্ষিত করতে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তা নিম্নরুপ ::

১। ফেসবুক আইডিতে জিমেইল যুক্তকরণ ;
২। কঠিন পাসওয়াড দেওয়া;
৩। ২ স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা;
৪। প্রোফাইল লক করা ;
৫। প্রতিটি লগইনে ইমেইল সিস্টেম ।

এই ৫টি উপায়ে আপনি আপনার ফেসবুক আইডিকে ৯০% সুরক্ষিত রাখতে পারবেন । আর বাকি ১০% ফেসবুক প্রশাসকের হাতে । কারণ তারা চাইলে আপনার কাজকে পযালোচনা করে আপনার ফেসবুক আইডি লক ও ডিলেট করে দিতে পারে । বেশিরভাগ সময় অন্যদের দ্বারা রিপোট খাইলে এরকম হয় । উপরে উল্লিখিত ৫টি পদক্ষেপ সম্পকে যৌক্তিক আলোচনা করা হলো ।

১। ফেসবুক আইডিতে জিমেইল যুক্তকরণ ::

আমাদের বেশিরভাগ মানুষের ফেসবুক আইডিতে জিমেল যুক্ত করা থাকে না । ফলে হ্যাকাররা সহজেই নিজেদের দখলে নিতে পারে । জিমেইল আইডি যুক্ত করার মাধ্যমে আপনার আইডি শতকরা ৫০% সুরক্ষিত হলো । তাই আমাদের যাদের আইডিতে জিমেইল যুক্ত নেই তারা জিমেইল যুক্ত করে ফেলুন । তবে যেকোন জিমেইল যুক্ত করবেন না । চালু আছে ও আপনার ফোনে লগ ইন করা আছে এরুপ জিমেইল যুক্ত করুন । আর যুক্ত করার পর অবশ্যই তা ভেরিফাই করে নিবেন ।

২। কঠিন পাসওয়াড দেওয়া ::

আমাদের বেশিরভাগ মানুষের ফেসবুক আইডিতে সহজ পাসওয়াড দেওয়া থাকে । এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে । তবে এমন পাসওয়াডও দেওয়া যাবে না যা মনে রাখা কঠিন । পাসওয়াডের ভিতরে বিরামচিহ্ন ব্যবহার করুন । একটি আদশ পাসওয়াডের উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো :
My.n@me,is%Muhit

৩। ২-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা ::

~~ হ্যাকাররা যদি আপনার একাউন্টে প্রবেশ করে এবং আইডিতে ২-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকে তবে হ্যাকারদের আইডি Access করতে প্রচুর সময় লাগে । আর এই প্রচুর সময়ের মধ্যে আপনার ফেসবুক আইডির পাসওয়াড পরিবতন করা এবং অন্য সকল ডিভাইস থেকে আইডি লগ আউট করা সহ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে আইডিকে রক্ষা করতে পারবেন ।

৪। প্রোফাইল লক করা ::

প্রোফাইল লক করার অনেক সুবিধা রয়েছে । হ্যাকাররা আপনার প্রোফাইল থেকে অনেক গুরুত্বপূণ তথ্য পেয়ে থাকে । প্রোফাইল লক করার ফলে অন্য কেউ সে সকল তথ্য আর পায় না । ফলে আইডি Access করতে পারে না । প্রোফাইল লক না করেও আপনার কিছু তথ্যকে Privacy কে Only me হিসেবে লুকিয়ে রাখতে পারেন যার ফলে তথ্যগুলো আপনি ব্যতিত অন্য কেউ দেখতে পারবে না । যে সকল তথ্য আপনি লুকিয়ে রাখবেন সেগুলো হলো :: মোবাইল নম্বর, জন্মদিন, ইমেইল ইত্যাদি ।

৫। প্রতিটি লগইনে ইমেইল সিস্টেম ::

এই পদ্ধতিতে আপনার আইডি লগইনের চেষ্টা করলেই আপনার যুক্ত করা জিমেইল একাউন্টে ইমেইল চলে যাবে । আইডিকে রক্ষা করার এটি একটি উৎকৃষ্ট উপায় ।

আজ আমার পক্ষ থেকে এগুলোই ছিল । সবাইকে ধন্যবাদ ।

The post আপনার ফেসবুক আইডিকে সুরক্ষিত রাখার কয়েকটি গুরুত্বপূণ টিপস appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/UL64Ake
via IFTTT

ভৌতিক গল্প লাভাররা কোথায় ? নিয়ে নাও একটি অসাধারণ ভৌতিক গল্প

ভৌতিক গল্প লাভাররা কোথায় ? নিয়ে নাও একটি অসাধারণ ভৌতিক গল্প

Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । আশা করি পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন । তো বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক
গল্পের নাম ‌: সেই রাতে।

“দোস্ত জানিস ঐ বাড়িটাতে নাকি অশরীরি আত্মা থাকে।”
রাহুলের কথা শুনে জানালা দিয়ে তাকাতেই একটা বাড়ির উপর চোখ
পড়লো।বেশ সেকেলে টাইপের একটা সাদা চুন দেওয়া বাড়ি।
সামনের দিকটাতে মস্ত বড় বাগান,সেখানে মাথা উচিয়ে দাঁড়িয়ে
আছে কয়েকশত আম আর কাঁঠালের গাছ সারিবেঁধে।দেখে
মনে হচ্ছে পরিত্যক্ত একটা ভেঙ্গে পড়া বাড়ি।ভিতরের দিকে
হওয়াতে তেমন ভাবে কারো নজর কাড়ে নি হয়তো।”
“রেল লাইন সংলগ্ন একটা বাড়িতে নতুন ভাড়ায় উঠেছি চার বন্ধু
মিলে।এখান থেকে কলেজটা বেশ কাছাকাছি হওয়াতে আগের
ম্যাচ ছেড়ে দিয়ে এই নতুন বাড়িটা ভাড়া নেওয়া।আশপাশে তেমন
কোনো হৈ হুল্লোড়-ও নেই।
মেইন রোড ছেড়ে একটু ভিতরের দিকে হওয়াতে ভাড়াটাও
কিছুটা কমে পেয়েছি।আর বাড়ির মালিকও এখানে খুব একটা
আসেন না।
তাই ব্যাচেলর হওয়াতে আমাদেরও বেশ সুবিধায় হবে।
বাড়িটা প্রথম দেখাতেই সবাই পছন্দ করে ফেলেছি,সস্তা দামে
এতো বড় একটা বাড়ি,কেই বা হাত ছাড়া করবে।তারউপরে তো
আবার ব্যাচেলর,মাস শেষে কিছু টাকাও বাঁচানো যাবে।তাই সবদিক
বিবচনা করে পরেরদিন
বিকেলে নতুন বাড়িতে সিফ্ট হয়ে গেলাম।
আসবাব পত্র নিয়ে এসে গাড়ি থেকে নামানোর সময় রাহুলের
কথা শুনে হৃদয় কয়েকটা ঢোক গিলে বললো,”দেখ আমি এসব
ভূত টুতের চক্ররে পড়তে চায় না ভাই।তারথেকে এ বাড়ি থেকে
চল চলে যাই।
-রাহুল তুইও না,অযথা কেন ভয় দেখাচ্ছিস ওরে।জানিসই তো এই
শহরে ব্যাচেলারদের বাড়ি ভাড়া পাওয়া কতটা ঝামেলার।
টেবিলটা কাঁধে নিয়ে কথাগুলো বলতে বলতে সিঁড়ি বেয়ে
উপরে উঠে গেলো হাসান।
আমিও হৃদয়কে অভয় দিয়ে বললাম,”শোন ভয়ের কিছু নেই
এখানে।আর আমরাও তো থাকছি,না কি?
রাহুল তোর সাথে মজা করছে।এখন হাতেহাতে আসবাবপত্র গুলা
তাড়াতাড়ি উপরে তুলতে হবে সন্ধার আগে।
তাড়াতাড়ি হাত চালা।
সকলের জিনিসপত্র ঠিকঠাক করতে গিয়ে সন্ধ্যা তখন চারপাশটাকে
ঘিরে নিয়েছে।আর আসবাব-পত্র তুলতে গিয়ে সবার নাজেহাল
অবস্থা।
এই মুহুর্তে রান্না করে খাওয়ার শক্তি বা মন কারোরই নেই।
তাই সবাই মিলে ঠিক করলাম,পাশের খাবার হোটেল থেকে খাবার
আনিয়ে আজকের রাতটা কাটিয়ে দেয়।গতকাল থেকে রুটিন
করে ফেললেই হবে।
আমি আর হাসান খাবার আনতে নিচে নেমে আসলাম।রাহুল আর হৃদয়
জিনিসপত্র গুলো ঠিকঠাক করে গুছিয়ে নিতে লাগলো।
সন্ধ্যা পেরিয়ে তখন রাতের আঁধার পেচিয়ে ধরেছে সরু
গোলিটাকে।এই দিকটাতে মোটের উপর দুটি বাড়ি।একটাতে
আমরা ভাড়া উঠেছি,আর অপরটা ভেঙ্গে পড়ার কারণে কেউ
থাকে না।যার কারণে এই গোলিটাতে বাল্ব দেওয়ার প্রয়োজন
মনে করে নি এলাকার মেয়র সাহেব।
মোবাইলের টর্চটা জালিয়ে দু’জন মিলে হাঁটছি আর কথা বলছি।
হাসান হুট করেই বলে উঠলো,”আচ্ছা আশিক,রাহুল তখন একটা বাড়ির
কথা বলছিলো তোর মনে আছে?
আমি সামনের দিকে অগ্রসর হতে হতে বললাম,”হ্যাঁ,কেন?
-সত্যি কি ও বাড়িতে কোনো অশরীরি আত্মা থাকে?
-তুই ও না,রাহুল তো তখন হৃদয়কে ভয় দেখানোর জন্য বানিয়ে
বানিয়ে বলেছিলো।
-তবুও,বাড়িটা দেখে আমার কেমন জানি মনে হচ্ছিলো।আর ও
বাড়িটাতে তো কোনো লোকজন ও থাকে না।
-পুরানো বাড়ি মানেই কি ভূতের বাড়ি হতে হবে,তোরাও না,দেখ
রাতের বেলাতে ওসব কথা না বলায় ঠিক,তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে হাঁট।
হাসানের প্রসঙ্গকে এড়িয়ে গিয়ে হোটেল থেকে খিচুড়ি
কিনে আবার বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
বাসায় ফিরে দেখি ততোক্ষণে রাহুল আর হৃদয় সবকিছু গুছিয়ে
পরিপাটি করে ফেলেছে।
চারজন মিলে ভাগাভাগি করে খিচুড়ি খেয়ে যে যার মত করে
নিজের বিছানা রেডি করে ফেললাম।
খাবার খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাটি করাটা আমার অভ্যাসে পরিনত
হয়েছে।না হাঁটলে কেন যানি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসে আমার।
তাই খাবার শেষে রাহুল,হাসান আর হৃদয় সুয়ে পড়লেও আমি ঘুরে
ঘুরে দেখতে লাগলাম বাড়িটাকে।দুটো রুম,একটা বাথরুম,আর সিড়ির
পাশে ছোট্ট করে রান্নাঘর।অবশ্য সিড়ি ঘরের সাথে একটা ঘর
বন্ধ হয়ে পড়ে আছে,বাড়িওয়ালা ঐ ঘরটাতে না ঢুকার জন্য কড়া
নির্দেশ জারি করে দিয়ে গেছেন।সম্ভবত স্টোর রুম হবে
হয়তো।
বাড়ির আশপাশে আর কোনো বাড়ি না থাকাতে চারপাশটা কেমন যানি
গম্ভির হয়ে আছে।
মাঝে মাঝে মেইন রোডে চলা,গাড়ির হর্ণ আর ঝিঁঝিঁপোকার ডানা
ঝাপটানোর শব্দে মুখরিত করে তুলছে চারপাশটাকে।
উত্তরের দিকটাতে সারিসারি আম আর কাঁঠাল গাছ।
তারপর আরেকটা বাড়ি।
আজকে মনে হয় অর্ধমাসরাত্রি,যার কারণে চাঁদটাকে এক ফালি
রুটির মত দেখাচ্ছে।
জোৎস্নাটাও বেশ,বাইরের সবকিছুই দিনের আলোর মত
ফকফকা।
কিছুক্ষণ হাঁটাহাটির পর রুমে চলে আসলাম,ততোক্ষণে সবাই
ঘুমের রাজ্যে বিভোর।আমারো যে ঘুম পাচ্ছে না একবারে তা
নই।জিনিস-পত্র গুছাতে গিয়ে সবাই বড্ড ক্লান্ত তারউপরে আবার
আগামীকাল সকালে কোচিং আছে।
তাই আমিও দেরি না করে চট করে ওদের পাশের বিছানাতে
সুয়ে পড়লাম,রুমের লাইটটা বন্ধ করে দিয়ে।
মাঝরাতে একটা দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
সদ্য বিবহিতা একজন নারী বিয়ের সাজে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে
সিলিং এর সাথে।আর তার আলতা দিয়ে রাঙানো লাল পা দুটি আমার
বুকের উপর শিড়শিড়ানি দিচ্ছে।
হুট করে উঠে বসে পড়ে,সিলিং এর দিকে তাকালাম।
তিন পাখার ফ্যানটা চক্রাকারে ঘুরছে অনবরত।তারমানে স্বপ্ন
দেখছিলাম এতক্ষণ।গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে ভয়ের
চোটে।বিছানার পাশে থাকা পানির বোতলটা হাতে নিয়ে গলাটা
ভিজিয়ে নিলাম।
তারপর বুকে ফুঁক দিয়ে আবারো সুয়ে পড়লাম।কিন্তু
কোনোভাবে দু’চোখের পাতা এক করতে পারছি না আর।
কেমন যানি অসস্থিবোধ লাগছে নিজের ভিতরে।
বারবার এপাশ ওপাশ করছি,আর দুঃস্বপ্নটাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলার
চেষ্টা করছি।কিন্তু কেন জানি মনের ভিতরে স্বপ্নটা গেঁথে
গিয়েছে মনে হচ্ছে।
এসবকিছুর ভিতরে হুট করে কানে ভেসে আসলো কারো
করুন সুরে ক্রন্দনের আওয়াজ।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময়টা একটাবার দেখে নিলাম।
ঘড়িতে তখন ঠিক দুটো বাজে,তারমানে এখন মধ্যরাতের শেষ
ভাগ।কিন্তু এতো রাতে কে কাঁদছে?
একটু ভালো করে কান পেতে সিউর হয়ে নিলাম।
“হ্যাঁ।এইটা কান্নার আওয়াজ,আর একটা মেয়ের কান্নার আওয়াজ।
বুকটা তখনি ধক্ করে উঠলো,যখন বুঝতে পারলাম,কান্নার শব্দটা
আর কোথাও না,আমাদের ঘর থেকেই আসছে।রান্না ঘরের
ওদিকটা থেকে।
অথচ এই বাড়িতে আমরা চার বন্ধু ছাড়া আর কেউই নেই। তারউপরে
আবার মেয়ে মানুষের কান্নার শব্দ!
তাহলে কান্নার আওয়াজটা কার,আর তা-ও আবার মেয়ে মানুষের?
মোবাইলের টর্চটা জালিয়ে দেখলাম,হাসান,হৃদয় আর রাহুল গভির
ঘুমে ডুবে আছে। তাই নিজে নিজে উঠে রুম থেকে বার
হলাম।
কান্নার আওয়াজটা এখন স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।আর আওয়াজটা
আসছে স্টোর রুমের ভিতর থেকে।
যেই রুমটাতে বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় কড়া নির্দেশ দিয়ে
ঢুকতে বারণ করে দিছিলো।
স্টোর রুমের বাইরে গিয়ে চুপচাপ কান পেতে দাঁড়িয়ে রইলাম।
বাইরে থেকে রুমটার তালা বদ্ধ করে রাখা।
বিষয়টা আমার কাছে বেশ অদ্ভুত লাগছে এই মুহুর্তে।
বাড়িওয়ালা নিশ্চয় কোনো মেয়েকে এই রুমের ভিতরে বন্দি
করে রেখে দিছে।আর সেই জন্য আমাদেরকে এই ঘরের
দিকে আসতে বারণ করে দিছে।
কিন্তু কাউকে জোরপূর্বক বন্দি করে রাখলে সে এতোক্ষণই
বা চুপচাপ থাকবে কেন?মাথার ভিতরে হুট করে হাজারটা প্রশ্ন
এসে হাজির হলো।
কিছুই মাথাতে আসছে না।কিন্তু ভিতর থেকে মেয়েটা অবিরত
কেঁদেই চলেছে।খুব করুণ সুরে কাঁদছে মেয়েটা।বুকের
ভিতরটা নিজের অজান্তে ব্যাথিত করে তুলতে লাগলো
ক্রন্দনের আওয়াজটা।
নিজেকে চায়লেও আর সামলিয়ে রাখতে না পেরে টোকা
মেরে বললাম।
” ভিতরে কে আছেন?
আমার কথা শুনে কান্নার আওয়াজটা সাথে সাথে বন্ধ হয়ে
গেলো।তারপর শুরু হলো জিনিস পত্র আচড়ে ফেলার শব্দ।
মনে হচ্ছে এক এক করে ভিতরের আসবাবপত্র গুলো সব
আছাড় মেরে মেরে ভাঙ্গছে।
আবারো টোকা মেরে বললাম
“কি হলো কোনো কথা বলছেন না কেন?আপনি চায়লে
আপনাকে এখান থেকে মুক্তি দিতে পারি আমি।
কিন্তু কে আপনি আর এখানে কি ভাবে এসেছেন,আর এতো
রাতে কাঁদছেনই বা কেন?
কি হলো কিছু বলছেন না যে?
এমন সময় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠলাম।
-কিরে তুই এতো রাতে কার সাথে বকছিস?
পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ঘুমঘুম চোখে হাসান দাঁড়িয়ে আছে।
নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে বললাম।
” দেখ না,ভিতরে একটা মেয়ে সেই কখন থেকে কান্না
করছে।আমি এসে জিজ্ঞাসা করাতে আর কিছু বলছে না।এই
রুমের ভিতরে একটা মেয়ে আছে।
হাসান দরজার দিকে একবার তাকিয়ে থেকে আমার দিকে
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বললো,”তোর আবার ঘুমের ভিতরে
হাটার রোগ কবে থেকে হলো?
-তোর কি মনে হচ্ছে,আমি তোর সাথে মজা করছি,আমি সত্যি
বলছি এই ঘরের ভিতরে কেউ একজন আছে।আর সে এতক্ষণ
কান্না করছিলো।আমি নিজের কানে শুনেছি।
-কি সব ভুলভাল বলছিস,এই দেখ ঘরটার বাইরে থেকে তালা বন্ধ।
আর এই বাড়িটাতে আমরা সেই বিকেল থেকে কথা বলাবলি
করছি,তাহলে তোর কি মনে হয়,এতক্ষণ এই রুমে কেউ বন্দি
হয়ে থাকলে চুপচাপ থাকতো।
বলেই তালা ধরে টান দিতে দিতে আবারো বললো,”ঘুমের
ভিতর কি না কি দেখে আবোল তাবোল বকছিস।চল ঘুমাতে চল।
-বিশ্বাস কর দোস্ত,আমি নিজের কানে শুনেছি।
-আচ্ছা ঠিকাছে,এখন তো আর কান্না করছে না।নিশ্চয় কান্না
করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে।চল তুইও ঘুমাতে চল।সকালে
আবার কোচিং আছে।কালকে দিনের বেলাতে বিষয়টা নিয়ে ভাবা
যাবে।
স্টোর রুমের চাবিটাও নেই,যে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে
সবাইকে সত্যিটা দেখাবো।প্রমান যেহেতু নেই,সুতরাং চুপচাপ
থেকে যাওয়াটাকে এই মুহুর্তে প্রাধান্য দিয়ে হাসানের সাথে
রুমে চলে আসলাম।
হাসান আমাকে সুতে বলে নিজে আবার সুয়ে পড়লো।আমি মাথার
নিচে বালিশ চেপে ধরে ভা্বছি,আসলে কি ঐ ঘরের ভিতরে
কোনো মেয়ে আছে? আমি নিশ্চিত ঐ রুমে কোনো
মেয়েকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।কোনোরকমে রাতটা
পার করি,তারপর কালকে সুযোগ বুঝে তালা ভেঙ্গে ব্যাপারটা
খতিয়ে দেখলেই হবে।

,,,
“সারারাত কাটলো ভয় আর দুশ্চিন্তার ভিতর দিয়ে।রাতে আর
কোনরকমে দু চোখের পাতা এক করতে পারলাম না।খুব
ভোরে উঠে পড়লাম আবার।সিড়ি ঘরের চাবিটা রুমের বাইরে
পেরেকে বাধাঁনো,তাই কাউকে ডাকার প্রয়োজন পড়লো না।
ওরা তিনজনে এখনো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে,কিন্তু আমার মনের
ভিতরে কিসের যেন একটা জড়তা কাজ করছে,ছাদে গিয়ে যদি
মনটা একটু হাল্কা হয়।
চাবিটা হাতে নিয়ে আরো একবার স্টোর রুমের দরজার সামনে
গিয়ে কান পেতে চুপচাপ দাঁড়ালাম।
” নাহ্ ভিতরটা একবারে নিস্তব্দ।তাহলে কি গতকালকের কান্নার
আওয়াজটা আমার ভ্রম ছিলো?
সে যাই হোক,চাবিটা হাতে করে সিড়ি ঘরের দিকে যেতে
গিয়ে থমকে দাড়ালাম আবার,একটা পুতুল দেখে!একটা মেয়ে
পুতুল,খুব সুন্দর করে সাজানো,ঠিক গতকাল রাতে স্বপ্নে দেখা
বধূ সাজের সেই মেয়েটার মত করে সাজানো আছে।
পুতুলটা ঠিক বেসিনের উপর দাড় করানো অবস্থাতে আছে।ভারি
অদ্ভুত তো,এ বাড়িতে তো আমরা চারজন ছাড়া আর কেউই
নেই,তাহলে বাচ্চাদের পুতুল আবার কে নিয়ে রাখলো?
গতকালকের হাবিজাবি মনে করে করে মাথাটা এমনিতেই প্রচন্ড
ধরে আছে,তারউপরে আবার পুতুলের এসব ঝামেলা নিতে চায়
না।
বিষয়টাকে তোয়াক্কা না করে ছাদে উঠে গেলাম।
বেশ মনোমুগ্ধকর একটা সকাল।শীতের আভাস ছড়িয়ে
পড়েছে চারপাশটাতে।
ছাদের কার্ণিশ জুড়ে মেখে আছে কুয়াশার বিন্দু বিন্দু জল।
কুয়াশাতে হাত দিতেই শরিরের ভিতরে কেমন জানি শিতল অনুভূতি
ছেয়ে গেলো।সামান্য একটু কাপা কাপা অনুভব হলো নিজের
ভিতরে।
বুক ভরে শ্বাস নিয়ে চারপাশটাতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম।
কুয়াশাতে চারপাশটাকে মুড়িয়ে ধরেছে,সবকিছু কেমন যানো
ভাপসা দেখাচ্ছে।
আম-কাঁঠালের সারি এড়িয়ে হঠাৎ করে চোখ পড়লো অদুরে
অবস্থানরত সাদা চুনের বাড়িটার উপরে।
গতকাল রাতের ঘটনাটা কোনোভাবেই মন থেকে সরতে
চায়ছে না।একটাবার দেখার দরকার স্টোর রুমের ভিতরটা,তাহলেই
সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
নিচে বেশ সোরগোল জমেছে,তারমানে সবাই হয়তো
উঠে গেছে। রাহুল বেশ কয়েকবার আমার নাম ধরে ডাক ও
দিছে।
আর দেরি না করে ছাদ থেকে নিচে নেমে আসতেই
দেখি,সবাই বাথরুমে যাওয়ার জন্য ঝগড়া শুরু করে দিছে।
আমাকে দেখে হৃদয় বলে উঠলো,”তুই এখানে!
-হ্যা।কেন?
-তুই বাইরে থাকলে বাথরুমের ভিতরে কে আছে তাহলে?
রাহুল,হৃদয় আর হাসান তিনজনে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে
দেখছে আমাকে।
আমি কিছুটা থতমত খেয়ে জবাব দিলাম।
-আমি কি করে বলবো,আমি তো ঘুম থেকে উঠে ছাদে
গেছিলাম।ভালো করে দেখ,হয়তো জ্যাম হয়ে গেছে।
হাসান বেশ কয়েকবার টান দিয়ে বললো।
-নারে,ভিতর থেকে লক করা মনে হচ্ছে।
জানি সবার ভিতরে একই প্রশ্ন ঘুরছে এখন।
“চারজনে বাইরে থাকলে বাথরুমের ভিতরে কে থাকতে পারে?
-গতকাল রাতে সবার শেষে বাথরুমে কে ঢুকেছিলো?(হাসান)
হৃদয় চোখ ডলতে ডলতে জবাব দিলো,” আমি।”
-তাহলে এখন আবার লক দেখাচ্ছে কেন?
নিশ্চয় ব্যাটা মরকট কিছু একটা করে এসেছে ভিতরে গিয়ে।(রাহুল)
-রাহুল তুই সবসময় আমাকে কেন দোষ দিস,তোরা কি সারারাতের
ভিতরে একবারো আর যাস নি?
আর আমিই বা কেন ভিতর কিছু করতে যাবো।
করে থাকলে তো আর তোদের সাথে এখানে পেট
চেপে ধরে দাড়িয়ে থাকতাম না।
হৃদয়ের কথাটাও ফেলার মত নয়।একটু বেলা গড়ালে মিস্ত্রী
ডেকে এনে ঠিক করে নিলেই হবে।হয়তো জ্যাম হয়ে
গেছে দরজার লকড্ টা।
সকালে সবাই মিলে রেললাইনের পাবলিক টয়লেট থেকে কাজ
সেরে কোচিং করতে গেলাম।।স্যার একাউন্টিং করাচ্ছে,কিন্তু
আমার মাথাতে কেন জানি ঐ বাড়িতে ঘটা কিছু ঘটনা খেলে
বেড়াচ্ছে। যতই ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছি
ততোই মগজধোলায় করছে ওগুলো।
স্যারের হ্যা তে হ্যা দিয়ে কোনোরকমে কোচিংটা শেষ
করে আবারো বাসায় চলে আসলাম।
অবশ্য হাসান আর হৃদয় মিস্ত্রী ডাকতে গেছে,আমার আর
রাহুলের রান্নার দিন আজকে।তাই ওদেরকে পাঠিয়ে দিয়ে আমার
দুজনে এসে রান্না চাপিয়েছি।
মিনিট ত্রিশেক পর হাসান আর হৃদয় তাদের সাথে একটা লোক
নিয়ে এসে হাজির হলো।
লিকলিকে দেহের গড়ন,চুলগুলাও কেমন জানি
উসকোখুসকো,মুখভর্তি দাড়ি-গোফ রেখে দেওয়াতে
অনকটা “শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ এর দেবদাসের মত লাগছে।
লোকটার ডান বাহুতে একটা ব্যাগ।
আমাকে দেখে হাসান বললো,” মিস্ত্রী নিয়ে এসেছি।তালা
সারানোর মাষ্টার ইনি।
তালার কথা শুনতেই হুট করে স্টোর রুমের কথা মনে পড়ে
গেলো।কারণ বাড়িওয়ালা সবঘরের চাবি দিয়ে গেলেও স্টোর
রুমের চাবিটা দেয় নি।
মিস্ত্রীকে বাথরুমের রোগ সম্পর্কে বলে দেওয়ার পর
মিস্ত্রী তার কাজে লেগে গেলেন।
আমি ঠাঁই দাড়িয়ে থেকে মিস্ত্রীর কাজ দেখছি।
বেশ নিপুণ হাতে তিনি দক্ষতার সাথে বাথরুমের লকড্ খুলে
ফেললেন মিনিট দশেকের ভিতরে।
-শীতকালে এমনডা হয় বুঝলেন দাদাবাবু ।
কথাটা বলে বিজয়ীর হাসি নিয়ে তাকালেন মিস্ত্রী মশাই।
-বাহ্ আপনি তো খুব দক্ষ হাতের কারিগর,এত কম সময়ে লকড্
খুলে ফেললেন?
-হ্ দাদাবাবু,আমার তো কামই এইডা।
-হুম,তো আরেকটু কাজ করে দিতে হবে যে আপনাকে?
-কন দাদাবাবু?
-ঐযে ঐ রুমটার চাবি বানিয়ে দিতে হবে।
-ওতো আমার বা হাতকা খেল দাদাবাবু।এই হাত লাগামু আর চাবি বানায়ে
দিমু।
কথাটা বলে মিস্ত্রী স্টোর রুমের চাবি বানানোর কাজে
লেগে গেলেন।খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে একদম সুক্ষভাবে চাবি
বানিয়ে হাতে দিয়ে বললেন,”এই লন দাদা।
চাবিটা হাতে পেয়ে আমার খুশি দেখে কে?
মিস্ত্রীকে তার পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিলে সে হাসিমুখে বিদায়
নিলো।
এদিকে ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় হয়ে আসলে সবাই রেডি হলেও
আমি মাথা ব্যথার অযুহাত দেখিয়ে বাসায় থেকে গেলাম।
সবাই বাড়ি থেকে বার হয়ে গেছে কিছুক্ষণ পর স্টোর রুমের
চাবিটা দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম।
“ভিতরে পুরানো কিছু আসবাবপত্র ছাড়া আর কিছুই নেই।তাহলে
গতকাল রাতের ঘটনাটা কি সত্যি আমার মনের ভুল ছিলো!
একপ্রকার হতাশা নিয়ে যেই না স্টোর রুম থেকে বার হবো ঠিক
তখনি চোখ পড়লো ভেঙ্গে পড়া আসবাব পত্রের নিচে।
একটু আগে বেসিনের উপর দেখা পুতুলটা এখানে কিভাবে
আসলো!
ছুটে গিয়ে বেসিনের সামনে এসে দাড়ালাম।না্হ এখানে পুতুলটা
নেই!সবকিছু কেমন যানি ঘোলাটে লাগছে।
স্টোর রুমের ভিতরে তো আমিই প্রথম ঢুকেছি,তাহলে বাহির
থেকে দরজা লকড্ করা থাকলে পুতুলটা ভিতরে আসলো
কিভাবে?
নাহ্ আর নিতে পারছি না,এইখানে থাকলে হয়তো আমি এসব ভাবতে
ভাবতে পাগল হয়ে যাবো।
রাহুলকে ফোন দিলাম,” তোদের আসতে কতক্ষণ লাগবে।
-এইতো ঘন্টা খানেক,একাউন্টিং ক্লাসটা হয়ে গেলে চলে
আসবো।কেন,কিছু বলবি?
-নাহ্।আচ্ছা ঠিক আছে তোরা আয়।
একা একা থাকলে হয়তো ওসব ভেবে ভেবে পাগল হয়ে
যাবো।তাই পাশের স্টেশনে গিয়ে দাড়িয়ে রয়লাম।শতশত
মানুষের ভিড় এখানে।সবাই তার নিজ গন্তব্যে যাওয়ার লক্ষ্যে
চাতক পাখির মত চেয়ে আছে ট্রেন আশার অপেক্ষাতে।
পাশের এক বই বিক্রেতার কাছ থেকে একটা বই নিয়ে বসে
পড়লাম,যেভাবে হোক একঘন্টা আমাকে বইটা পড়ে কাটাতে
হবে।
ঝকঝক ঝকঝক শব্দ করে ট্রেন এসে থামলো প্লাট ফর্মে।
দাড়িয়ে থাকা যাত্রীরা সবাই যে যার মত করে উঠে পড়তে
লাগলো।
বইটা হাতে ধরে স্টেশনের মানুষগুলোর কর্মকান্ড দেখছি।
হঠাৎ করে চোখ আটকে গেলো ২০৩ নং কেবিনটার দিকে
চোখ পড়তে।
জানালার পাশের সিটে বসে আছে একটা মেয়ে।হ্যা এইটা আর
কেউ না,গতকাল স্বপ্নে যাকে দেখেছিলাম গলায় ফাঁস দিয়ে
ঝুলতে এইটা সেই মেয়েটা।ট্রেন গড়াতে শুরু করলো,আমি
অবাক দৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ করে মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে একটা পৈশাচিক হাসি দিয়ে
উঠলো।
বইটা ফেলে রেখে ছুটতে লাগলাম ট্রেনের পিছু পিছু। কিন্তু
ততোক্ষণে ট্রেন আমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
দুপুরের দিকে বাসায় ফিরলাম,সবাই তার নিজ নিজ জামা-কাপড় গোচগাছ
করাতে ব্যস্ত।
আমি হুট করে বলে উঠলাম,”আচ্ছা স্টোর রুমের ভিতরে কি
এমন আছে,যে বাড়িওয়ালা বারবার স্টোর রুমের দিকে যেতে
বারণ করছিলো?
কথাটা শুনে রাহুল আমার দিকে তাকিয়ে বললো,”কি আবার
থাকবে,হয়তো পুরানো আসবাবপত্র।
-তাহলে বাড়িওয়ালা বার বার নিষেধ কেন করছিলো?নিশ্চয়
কোনো ঝামেলা আছে ঐ রুমটার ভিতরে।
-সে যাই থাকুক,আজকে বিকেলের মিশন পাশের বাড়ি প্রবেশ
করা।
-কেন?
-কেন আবার,দেখবো কি আছে।শুনেছি পুরানো বাড়ি
গুলোতে নাকি অনেক কিছু থাকে।তুই যাবি আমাদের সাথে?
সাতপাঁচ না ভেবে বললাম,”হ্যা যাবো।
-তাহলে আমরা তিনজনে যাচ্ছি,ঠিক আছে।
-তিনজন কেন?আর একজন কোথায় যাবে?
-হৃদয় সালা তো একটা ভিতুর ডিম।
ও বাড়িতে যাবো শুনে ভয় পেয়ে বলেছে,ওর নাকি খালা
অসুস্থ্য।ও সেখানে যাবে।আর ওরে নিয়ে গিয়েও কিচ্ছু হবে
না,অযথা পিছুটান থাকবে তখন।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে একটু বিশ্রাম করার পর বেরিয়ে
পড়লাম,তিনজনে।
আমাদের ভাড়া বাড়িটার পিছন দিয়ে গেলে সর্টকাট।
তাই বাড়ির প্রাচির টপকিয়ে বাগানে প্রবেশ করলাম।
মনে হয় এদিকটাতে বিগত দশবছরে কোনো মানুষ আসে নি।
ঝরে পড়া পাতার স্তুপ জমে হাটু অবধি উঁচা হয়ে আছে।
সাবধানতার সহিত এগিয়ে যেতে লাগলাম তিনজন।কিন্তু বাড়ির ভিতরে
ঢুকে তিনজনে হতাশ হলাম।
এক পাল বাদুড়ের দল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলাম না।
বিকেলের দিকে একটু ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলাম।
দেখি হৃদয় আগে হতে এসে ল্যাপটপে গেইমস খেলছে।
রোজকার মতন রুটিন মাফিক সবকিছু করে,রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে
বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর যে যার মত করে ঘুমিয়ে
পড়লাম।
আর ঝামেলাটা শুরু হলো তখন থকেে।
গতরাতের মত আবারো কারো কান্নার আওয়াজ ভেসে আসতে
লাগলো।
বিছানা ছেড়ে সাবধানতার সাথে চাবিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে
স্টোর রুমের সামনে দাড়ালাম।
“আজকেও ভিতরে কোনো একজন মহিলা কণ্ঠে করুণ সুরে
কান্না করছে।ধিরেধিরে চাবিটা দিয়ে তালা খুলে ভিতরে গিয়ে
বললাম,” কে,কে ওখানে?
কথাটা বলেই মোবাইলের টর্চ অন করতেই দেখলাম,ঘরের
এক কোণে কেউ চুপটি মেরে বসে আছে।আর তার সামনে
একটা পুতুল ঘুরে ঘুরে নাচছে।
পা টিপে টিপে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,”কে আপনি?আর
এখানেই বা কি করে?
মেয়েটি কথার জবাব না দিয়ে চুপচাপ মাথা নিচু করে পুতুলটার নাচ
দেখছে।
আমি আরেকটু সাহস করে এগিয়ে গিয়ে মাথাতে হাত দিতেয়
মেয়েটা মুখ তুলে তাকাতেয় শরিরের সব রক্ত নিমিষেই পানি
হয়ে গেলো।
মেয়েটার চোখ দুটি রক্তবর্ণ হয়ে আছে।মুখের মাংস গুলা
যেন এইমাত্র খসে পড়বে।দাতগুলা কেমন যানি আলকাতরার মত
কালো হয়ে বেরিয়ে এসেছে।
কি বিশ্রী চেহারা।
হাত-পা সমানে কাপতে শুরু করে দিছে আমার।
মোবাইলটা ফেলে দিয়ে চিৎকার দিতেই জ্ঞানশুন্য হয়ে
মেঝেতে পড়ে গেলাম।।।

সকালে কারো পানির ছাটা পেয়ে চোখ মেলে তাকিয়ে
দেখলাম আমি বিছানাতে সুয়ে আছি।আর তিনপাশে তিন বন্ধু বসে
আছে,সবার মুখেই চিন্তার লেশ জড়ানো।
-তুই ঐ রুমে কি করতে গেছিলিস,আর রুমের চাবি পেলি
কোথায়? (হাসান)
আমতা আমতা করে জবাব দিলাম,”ঐ রুমের ভিতর থেকে একটা
মেয়ে রোজ রাতে কান্না করে।তোদেরকে বললেও
তো তোরা বিশ্বাস করিস নি,তাই আমি নিজ থেকে গতকাল
মিস্ত্রীর কাছ থেকে চাবি বানিয়ে নিয়েছিলাম।
আর রাতে যখন মেয়েটা কান্না করছিলো তখন তালা খুলে
ভিতরে ঢুকেছিলাম।
-তো কি দেখলি,দেখেছিস তো ঐ মেয়েটাকে?(হাসান)
-দোস্ত তোরা বিশ্বাস কর,আমি গতকাল রাতে নিজের চোখে
দেখেছি।
একটা অল্প বয়সি মেয়ে আর একটা পুতুলকে।মেয়েটা স্টোর
রুমের এক কোণে বসে ছিলো আর পুতুলটা ঘুরে ঘুরে
নাচছিলো।
-মেয়েটা খুব সুন্দর তাই না(রাহুল)
-তোদের কি মনে হয় আমি মিথ্যা বলছি,সত্যি গতরাতে আমি ঐ
রুমের ভিতরে একটা মেয়েকে দেখেছি।
মেয়ে বললে ভুল হবে,অশরীরী আত্মা ছিলো ঐটা।
তার চোখ দুটো দিয়ে যেন আগ্নেয়গিরির মত আগুন ফুলকে
বের হচ্ছিলো।
পুরো মুখটা পচে গিয়ে মাংস গুলো খুলে খুলে পড়ছিলো।
উফপপ কি বিশ্রী আর ভয়ংকর চেহারা।আমি ভাবতে পারছি না।
-আমি আগেই বলেছিলাম এই বাড়িতে না উঠতে।চল না চলে যাই
অন্যকোথাও।
কথাগুলো বলেই হৃদয় কেঁদে দিলো ভয়ের চোটে।
-আশিক তোরে কতবার করে নিষেধ করেছি,হরর মুভি দেখা বাদ
দে।এসবকিছু তোর হরর মুভির সাইডইফেক্ট।রাত জেগে
জেগে একা একা হরর মুভি দেখবি আর সেগুলো ভেবে
সবসময় গন্ডগোল পাকাবি।এর আগের বারও এমনভাবে সবাইকে
ভূতের ভয় দেখিয়েছিলিস।দেখ আগেও বলেছি আর এখনো
বলছি ব্যাচেলারদের বাসা ভাড়া পেতে কতটা কষ্ট করতে হয়?
এই বাড়িটা অনেক কষ্ট করে পেয়েছি।প্লীজ দোস্ত এমন
করিস না।
আর তোর যদি এ বাড়ি পছন্দ না হয়,তাহলে তুই যেতে পারিস।
অযথা আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে বাস্ত্রহারা করিস না।
একদমে কথাগুলো বলে উঠে দাড়ালো হাসান।
তারপর জানালার মুখে গিয়ে থমকে দাড়ালো।
আমিও চুপ করে গেলাম।কারন ওদেরকে যত যাই বলি না কেন
ওরা আমার কথা বিশ্বাস করবে না।ভাববে বাড়ি চেঞ্জ করার ফন্দি
আটছি।
সবাই মিলে একসাথে সকালের খাবার খেয়ে ক্যাম্পাসে গেলাম।
আমি কয়েকবার রাতের কথা বলতে গেলেও রাহুল আর হাসান
প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছে।কিন্তু তাদেরকে কে বুঝাবে,ও
বাড়িতে থাকা আমাদের জন্য রীতিমতো রিস্ক হয়ে যাচ্ছে। বলা
যাই না কার সামনে হুট করে ঐ প্রেতাত্মাটা এসে হাজির হয়।
ক্যাম্পাস থেকে ফিরে সারাবিকেল কাটলো দুশ্চিন্তাতে,জানি না
আজকে রাতে আবার কি হতে চলেছে?
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো,সবাই নিজের কাজ নিয়ে
ব্যস্ত,কিন্তু আমার মাথাতে গত দুদিন রাতের ঘটনাগুলো চক্রর
কেটে বেড়াচ্ছে।
রাতে সবাই খাবার খেয়ে যে যার মত সুয়ে পড়লো।কিন্তু
আমাকে আজকে হাসানের বিছানাতে সুতে হয়ছে,আর হাসান
আমার বিছানাতে।
সুয়ে থেকে মোচড়ামোচড়ি করছি দেখে হাসান বলে
উঠলো,”কিরে,ঘুমাবি না,নাকি আজকেও যাবি তোর ভূত জি এফ এর
সাথে দেখা করতে?
আমি কোনো কথা না বলে উল্টাপাশ ফিরে সুয়ে থাকলাম।
রাহুল আর হৃদয় দুজনেই ঘুমাচ্ছে।নানারকম চিন্তাভাবনা মাথার ভিতরে
ঘুরতে ঘুরতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না।
হঠাৎ করে কারো ধাক্কা মারাতে তাড়াহুড়ো করে উঠে বসলাম।
দেখি হাসান পাশে বসে আছে,তার চোখেমুখে ভয় জড়ানো।
বেশ কয়েকটা ঢোক গিলে বললো,”দোস্ত তোর কথাই
সত্যি।
স্টোর রুমে কেউ একজন আছে!
আমি তোর কথার সত্যতা যাচাই করার জন্য,তোরা সবাই ঘুমিয়ে
যাওয়ার পর আমি একা একা স্টোর রুমের বাইরে বসে ছিলাম।
অনেকক্ষণ যাবৎ বসে থাকার পর,দেখি রুমের ভিতর
থেকে,নারী কণ্ঠে কেউ একজন করুন সুরে কান্না করছে।
-বলেছিলাম না,ঐ রুমে প্রেতাত্মা আছে,তোরা তো বিশ্বাস
করিস নি আমার কথা।
আমার কথা শুনে হাসান আর কিছু না বলে উঠে গিয়ে রুমের দরজা
খুলে দিলো।
শনশন করে বাতাস এসে পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়লো।
একমুহূর্তের জন্য শরিরে শিরশিরে অনুভব হলো আমার।
বসে থেকে বলে উঠলাম,”জানালাটা বন্ধ করে দে,শীত
লাগছে খু্ব।
কিন্তু হাসান কোনো উত্তর না দিয়ে,চুপচাপ জানালার বাইরে তাকিয়ে
রয়লো।
আমি আবারো বললাম
“কিরে জানালাটা বন্ধ করে দে,খুব শীত করছে।
এবারো কোনো উত্তর দিলো নজ হাসান,তাই নিজ থেকে
উঠে গিয়ে জানালাটা বন্ধ করতে গিয়ে বড়সড় একটা ধাক্কা
খেলাম।
অবয়বটা হাসানের হলেও,মাথাটা অন্যজনের।
ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম,” হাসান কি হয়ছে তোর?
আমার কথা শুনে হাসানের মুখ থেকে নারী কণ্ঠে কেউ
একজন বলে উঠলো,কে হাসান?আমি রিয়া।তোদের সবাইকে
মরতে হবে।তোরা আমার ঘুম ভাঙ্গিয়েছিস।
বলেই ভয়ংকর ভাবে হাসতে লাগলো।
আমি আর কোনো কথা না বলে,রাহুল আর হৃদয়কে ডেকে
তুলে বললাম,”তাড়াতাড়ি উঠ,আমাদেরকে এখনি এখান থেকে
পালাতে হবে।
রাহুল ঘুমের ভিতরে বলতে লাগলো,”আরেকটু ঘুমাতে দে
দোস্ত।
-রাখ তোর ঘুম,বেঁচে থাকলে পরে ভালো করে ঘুমিয়ে নিস।
হৃদয়,হাসানের ভয়ংকর রূপ দেখে তো ভয়ে কান্না করে দিলো।
রাহুলকে ডেকে তুলে অবিলম্বে ঘর ছেড়ে বার হতে
যাবো ঠিক তখনি সিড়ি ঘরের সামনে শাড়ি পরিহিতা কাউকে দেখে
থমকে দাড়াঁলাম।
ডান হাত দিয়ে কারো মুন্ডু চেপে ধরে রেখেছে সে।
হাতে থাকা মোবাইলের টর্চ ফেলতেই বুকের ভিতরে ধক্
করে উঠলো।হাসানের মাথাটা মেয়েরূপি প্রেতাম্মাটা তার হাতের
পাঁচ আঙ্গুলের মাঝে চেপে ধরে রেখেছে।
চোখ বেয়ে এখনো রক্ত পড়ছে মেঝেতে।
হৃদয়ের হাতটা ধরে এক হেচকাটানে স্টোর রুমের পাশ দিয়ে
সরু সিড়িটা বেয়ে নিচে নামতে শুরু করে দিলাম।
-এই রাহুল কোথায়?
হৃদয়ের কথা শুনে থমকে গিয়ে পিছু ফিরে তাকালাম।কিন্তু পিছনে
রাহুল নেই!
তাহলে কি রাহুলকেও প্রেতাত্মাটা শিকার করে নিয়েছে।
পিছনের চিন্তা চেতনা ফেলে দিয়ে হৃদয়কে সাথে নিয়ে
অন্ধ্যকার রাস্তা দিয়ে সোজা হাটছি।
কোনরকমে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছাতে পারলেই হয়।
চাঁদের আবছা আলোতে রাহুলকে দেখে দু’জনেই থমকে
দাড়ালাম।
-রাহুল তুই এখানে?(আমি)
-হ্যাঁ।আমাকে ফেলে রেখেই চলে যাচ্ছিলি?(রাহুল)
-এখন কোনো উত্তর দেওয়ার সময় না।চল এখান থেকে
তাড়াতাড়ি।
কথাটা বলে রাহুলের হাতটা ধরতে গিয়ে মনে হলো,তার হাতটা
সবে মাত্র ডিপ ফ্রীজ থেকে বার করে আনা হয়েছে।
-কিরে চল।
বলেই টান দিতে গিয়ে চোখ আরো একবার কপালে উঠলো
আমাদের।
সদ্য ধরে রাখা হাতটা আমার মুঠোতে।আর রাহুল অদুরে দাড়িয়ে
আছে।
রাহুলের কাটা হাতটা আমার হাতটাকে যেন আষ্টেপৃষ্টে ধরে
রাখছে।
এক ঝটকায় রাহুলের হাতটা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে হৃদয়কে
বলে উঠলাম।
-হৃদয় ভাগ,ওরা রাহুলকেও মেরে ফেলেছে।
বলেই দু’জনে এক দৌড়ে এসে স্টেশনে এসে থামলাম।
স্টেশন তখন প্রায় মানব শুন্য।গুটি কয়েক মানুষ থাকলেও তারা সবাই
চাদর মুড়িয়ে ঘুমাচ্ছে।
স্টেশন মাষ্টারের ঘরের সামনে থাকা ঘড়িটাতে একটাবার তাকিয়ে
সময়টা দেখে নিলাম ভালো করে।
দুটো ত্রিশ বাঁজে ঘড়িতে,
তাহলে ভোর হতে এখনো দু ঘন্টার বেশি লাগবে।
এতক্ষণ কিভাবে কাটাবো?
-দোস্ত আমাদেরকেও মেরে ফেলবে তাই না বল।
আমরাও বাঁচতে পারবো না রে?ঠিকি মেরে ফেলবে ঐ
মেয়েটা।
কি এমন ক্ষতি করেছি আমরা তার,যে এভাবে এক এক করে হত্যা
করছে।আমি প্রথমেই নিষেধ করেছিলাম।তখন তো শুনিস নি।
তখন আমার কথা শুনলে হয়তো আজ রাহুল আর হাসানকে এভাবে
মরতে হতো না।
হৃদয়ের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ থেকে এদিক ওদিক
তাকাতে লাগলাম।পুরো স্টেশনটা নিস্তব্দ হয়ে আছে।
আমাদের দু’জনকে অবাক করে দিয়ে হঠাৎই স্টেশন মাষ্টার তার
ঘন্টা বাজিয়ে উঠলো।
অদুর থেকে ট্রেনের হুইসেলের শব্দ ভেসে আসছে।
মিনিট কয়েকের ভিতরে স্টেশনটা হুট করেই জনমানবে পরিপূর্ণ
হয়ে গেলো।
ঠিক যেমনটা গতকাল স্টেশনে এসে দেখেছিলাম।
সবাই দাড়িয়ে থেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছে।
সবকিছু যেন চোখের সামনে ঘটলেও দুঃস্বপ্নের মত মনে
হচ্ছে।মিনিট পাচেকের ভিতরে ট্রেন এসে প্লাটফর্মে
থামতেই যে যার মত করে ট্রেনে উঠে পড়তে লাগলো।
ট্রেনটা যেহেতু উত্তরের দিকে যাবে সেহেতু আমাদের
জন্য সুবিধায় হবে।
কোনোরকম চিন্তা না করে ট্রেনে উঠে পড়লাম।
ট্রেন তার নিজ গতিতে চলতে আরম্ভ করলো।গভির রাত মানব
শুন্য রাস্তা পেয়ে ট্রেনটা যেন বিদ্যুতের গতিতে ছুটে
চলছে সামনের দিকে।
-উফপ হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।কিন্তু হাসান আর রাহুলের জন্য খুব খারাপ
লাগছে।
বলেই হৃদয় ভিতরে দিকে গেলো বসার জন্য।
আমি দরজার মুখে দাড়িয়ে থেকে পিছনে ফেলে আসা
বন্ধুত্বের স্মৃতিগুলা আওড়াচ্ছি।
এমন সময় হৃদয় হন্তদন্ত হয়ে এসে বললো,”আশিক আমরা আর
বাঁচবো না।
ট্রেনটাও একটা সাজানো ফাঁদ।
ট্রেনের ভিতরে কোনো জিবিত মানুষ নেই।
হৃদয়ের কথা শুনে ভিতরের দিকে চোখ দিতেই শরিরের সমস্ত
লোম গুলো কেন যানি কাটা দিয়ে উঠলো।
কারো চোখ খুবলিয়ে তোলা,কারো হাত নেই,কারো মাথা
নেই,কেউ অর্ধেক শরির নিয়ে বসে আছে চেয়ারে।
কিছুক্ষণের জন্য মনে হলো,মৃত্যুপূরীতে দু’জন অর্ধমৃত
যাত্রী বসে থেকে মরার প্রহর গুনছি।
ট্রেনের ভিতরে থাকলে মুত্যু অবধারিত,আবার ট্রেন থেকে
ঝাপ দিলেও মৃত্যু অনিবার্য।
তবুও বুকে সাহস চেপে দু’জনেই ঝাপ দিলাম ট্রেন থেকে।
চোখ খুলতেই দেখলাম কেউ একজন আমাদের দুজনের পা
ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
চাঁদের আলোতে বুঝতে বাকি রয়লো না,সামনে থাকা মানুষটা
আর কেউ না।
স্টোর রুমে আটকে থাকা প্রেতাম্মাটা।
হৃদয়ের মুখটা থেতলে গেছে পাথরের উপরে ছিটকে
পড়াতে।আমারো বাম পা টা অসহ্য যন্ত্রনাতে ফেটে পড়তে
চায়ছে।
অসহায় হয়ে করুনার স্বরে বললাম,”আমাকে ছেড়ে দিন!আমরা কি
এমন ক্ষতি করেছি আপনার?
প্রেতাম্মাটা কোনো কথা না বলে হিড়হিড় করে টানতে টানতে
আবারো বাড়িটার ভিতরে নিয়ে এসে থামলো।
পিঠটা অসহনীয় যন্ত্রনাতে ফেটে যাচ্ছে।
আমার ক্রন্দনের সুর যেন তার কানে বিজয়ের ধ্বনি হয়ে
বাঁজছে।
তার ভয়ংকর হাসির শব্দ আমার কানকে বিদ্ধ করে তুললো।মনে
হচ্ছে কানের পর্দা ফেটে রক্ত বার হয়ে আসতে চায়ছে।
-প্লীজ আমাকে ছেড়ে দিন!
-চুউউপপপ।
মুখের উপর আঙ্গুল চেপে ধরে কথাটা বলে অপলক দৃষ্টিতে
তাকিয়ে থেকে আবারো বললো,”দেখ তোর
বন্ধুদেরকে।কি গভির ঘুমে ঘুমিয়ে আছে।
-আমাদের দোষ কোথায়,আমরা তো শুধু এ বাড়িতে থাকতে
চেয়েছি এর বেশি কিছু তো চায় নি।
-নাহ্ তোরা এ বাড়িতে থাকতে পারবি না।
এ বাড়িতে শুধু আমি আর আমার ছেলে থাকবো।
-ছেলে!ছেলে কোথা থেকে আসলো?
-আমার ছেলে,সে আছে এই ঘরেই আছে। পুরো বাড়ি
জুড়ে তার বিচরণ।
তোদের জন্য সে শান্তিতে খেলাও খেলতে পারে না।
-আচ্ছা ঠিক আছে,আমরা এ বাড়ি ছেড়ে দিবো।
কিন্তু আমার বন্ধুদেরকে আবার আগের মত জিবিত করে দিতে
হবে।
-সওদা করতে চাস তুই?
-না,শুধু বন্ধুদেরকে বাঁচাতে চায়।
-তাহলে এ বাড়ির মালিককে নিয়ে আসতে হবে তোকে?
-কেন?
-তাকে পেলে তোদেরকে যেতে দিবো।
-কিন্তু তাকেই বা আমি মৃত্যুর পথে ঠেলে দিবো কি করে?
-এটাই তার প্রাপ্য।তোমাদেরকে আমি ছেড়ে দিবো,যদি এই
বাড়ির মালিককে নিয়ে আসতে পারো।
-কিন্তু সে কি এমন করেছে,যে তাকে মারতে চায়ছেন?
-তার জন্যই আমার ছেলে জন্মের আগেই মরে গেছে,আর
তার সাথে আমিও।
-মানে?
-এ বাড়ির মালিক জসিমউদ্দিন এর একমাত্র মেয়ে।
বাবা আমাকে এতোটাই ভালোবাসতো যে নিজের একমাত্র
মেয়েকে চোখের আড়াঁল হওয়ার ভয়ে,শাহেদ নামের একটা
ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে দেয়।যাকে তোমরা
বর্তমানে মালিক হিসেবে জানো
শাহেদ নাকি বাবার খুব বিশ্বস্ত ছিলো। আর সেই জন্য কোনো
সন্দেহ ছাড়ায় তার হাতে তুলে দেয় আমাকে।
কিন্তু সে ও সুযোগের ব্যবহার করেছিলো আমার সাথে।
বাবা মারা যাওয়ার কয়েকমাসের ভিতরে তার আসল রূপ বার হয়ে
আসে।নিত্যনতুন মেয়ে নিয়ে আসতো এখানে।আর রাত
কাটাতো,আমি নিষেধ করতে গেলেই আমাকে বেধড়ক
মারতো।
তবুও সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছিলাম।
শুধু আমার পেটে বাড়তে থাকা অনাগত শিশুটার দিকে তাকিয়ে
থেকে।
কিন্তু নরপশুটা আমার বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটাকেও বাঁচতে
দেয় নি।
নয় মাসের অন্তসর্তাকালীন আমাকে স্টোর রুমে বন্দি করে
রেখে দেয়।
খাবারের অভাবে স্টোর রুমের ভিতরেই আমার ক্ষুধার্থ
অবস্থাতে মৃত্যু হয়।
রোজ একটু পানির জন্য আর্তনাদ করতাম,আর নরপশুটা আমার
আর্তনাদ শুনে হাসতো।আর উপভোগ করতো।
মরে যাওয়ার পরও কখনো আমার লাশটাকে একটা বারের জন্য
দেখার প্রয়োজন মনে করে নি।
তার মৃত্যুই পারে আমার আত্মাকে শান্তি দিতে।
ভোরের দিকে রওনা দিলাম মালিকের ঠিকানাতে।
বেলা দুপুর নাগাদ গিয়ে পৌছালাম।কিন্তু মালিকের কোনো পাত্তা
পেলাম না।
বাড়ির কেয়ারটেকারের কাছ থেকে জানতে পারলাম,নতুন একটা
চিড়িয়াকে নিয়ে ঘুরতে গিছে।
আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
কিন্তু আমাকে তো যেভাবেই হোক তাকে নিয়ে ফিরতে
হবে।তাই এদিক ওদিক ঘুরে সময় কাটালাম।
সন্ধ্যার একটু আগে বাড়ি ফিরলে তাকে কোনরকমে বুঝিয়ে
সুঝিয়ে ফিরে আসলাম।
-কোথায় কি হয়ছে বলো?এতো জরুরি ভাবে ডেকে নিয়ে
আসলে যে?
-আপনার বাসায় কিছু প্যারানরমাল ঘটনা ঘটছে কিছুদিন থেকে।এই
বাসাতে কিছু একটা আছে।
-কি বলো এসব,কি থাকবে এখানে?
-তাতো জানি না,বিশ্বাস না হলে আজকের রাতটা আমাদের সাথে
কাটাতে পারেন।
লোকটাও বেশ একগুয়ে,যার কারণে খুব একটা কষ্ট করতে
হলো না।অল্পতেই থাকতে রাজি হয়ে গেলো।
আর বন্ধুরা কোথায় জানতে চায়লে কোনোরকমে বুজিয়ে
দিলাম।
দু’জন দুটি রুমে সুয়ে আছি।আমার কোনোভাবেই ঘুম আসছে
না,অপলক দৃষ্টিতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থেকে রাত বারোটা বাজার
অপেক্ষা করছি।
ঘড়ির কাটাতে রাত বারোটা বাজাঁর সাথে সাথে স্টোর রুম থেকে
কান্নার আওয়াজ বেরিয়ে আসতে লাগলো।
রুম থেকে বার হয়ে দেখলাম,লোকটা আগে হতেই স্টোর
রুমের দরজার পাশে দাড়িয়ে আছে।
মৃত্যু সন্নিকটে জেনেও মৃত্যুর পথে দাড়িয়ে থাকতে এই
প্রথম কাউকে দেখছি আমি।
লোকটার চোখে মুখে বেশ বিষন্নতার রেশ ছড়িয়ে আছে।
ভিতস্থত ভরে চাবি দিয়ে লক খুলে স্টোর রুমের ভিতরে
ঢুকে যাওয়ার সাথে সাথে ভিতর থেকে দরজাটা আটকে
গেলো।
লোকটা ভিতর থেকে বাঁচাও বাঁচাও করে আর্তনাদ করছে।
হয়তো সেদিন ও ঐ মহিলাটি এমনিভাবে আর্তনাদ করেছিলো
বাঁচার জন্য।
কিছুক্ষণ পর লোকটার আর্তনাদ চার দেওয়ালের মাঝে চাপা পড়ে
গেলে আলমারির ভিতর থেকে পরিচিতো তিনজনের কণ্ঠে হৈ
হুল্লড় লেগে গেলো।
তাড়তাড়ি গিয়ে আলমারি খুলে দিতেই দু তিনটা কিল ঘুষিও খেলাম।
তাকিয়ে দেখি রাহুল,হাসান আর হৃদয় তিনজনে সুস্থ শরিরে দাড়িয়ে
আছে।
-আমাদেরকে আলমারিতে বন্দি করে রেখে কি করছিলিস
হারামি,নিশ্চয় স্টোর রুমের নতুন জি এফের সাথে সাপ লুডু
খেলছিলিস।
আমি কোনো উত্তর না দিয়ে শুধু একটু হেসে দিয়ে
বললাম,”আমাদেরকে যেতে হবে এখান থেকে।
তোদের জন্য একটা নতুন বাড়ি ঠিক করেছি,একদম ক্যাম্পাসের
পাশে।
ভাড়াটাও একদম কম।
বলেই ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিতে লাগলাম।
ভোরের দিকে এ বাড়ি ছেড়ে দিয়ে আবার নতুন বাড়িতে
উঠবো।না জানি সেখানের স্টোর রুমটার ভিতরে আবার কি
থাকবে?
-বাড়িওয়ালাকে না বলে এভাবে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়াটা কি ঠিক
হবে?(হাসান)
-সমস্যা নেই,বাড়িওয়ালার সাথে আমার কথা হয়ছে।
তার আর বাড়িভাড়া নিয়ে ওতো মাথা ব্যাথা নেই।
কি বলেন?
স্টোর রুমের পাশে দাড়িয়ে থাকা মহিলাটা মুচকি হেসে আবারো
অদৃশ্য হয়ে গেলো।
-কিরে কাকে আপনি করে বলছিস?(রাহুল)
-ওসব তোরা বুঝবি না।চল তাহলে নতুন বাড়িতে যাই।
সমাপ্ত….

তো আজকে এই পর্যন্তই । মানুষ মাত্রই ভুল হয় । তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আপনি চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে join করতে পারেন । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে  আমার সাথে যোগাযোগ করবেন । 
           
           



The post ভৌতিক গল্প লাভাররা কোথায় ? নিয়ে নাও একটি অসাধারণ ভৌতিক গল্প appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/IX0bH6c
via IFTTT

এবার পাসওয়ার্ড জানলেও কেউ আপনার ওয়াইফাই কানেক্ট করতে পারবে না (পর্ব-২)

এবার পাসওয়ার্ড জানলেও কেউ আপনার ওয়াইফাই কানেক্ট করতে পারবে না (পর্ব-২)

আসসাামুআলাইকুম বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশাকরি মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।


যারা আমার এই পোস্টের প্রথম পর্ব দেখেন নি তারা এই লিংক এ ঢুকে দেখে নিতে পারেন।


গত পর্বে আমি দেখিয়েছিলাম কিভাবে ওয়্যারলেস ম্যাক ফিল্টার অপশন এ যেতে হয়। তবে পোষ্ট খুব বড়ো হয়ে যাওয়ায় মূল কাজ এর কিছুই দেখানো সম্ভব হয়নি।



এই পর্বে আমি পুরো ট্রিক টি বর্ণনা দিয়ে পোষ্ট টি কমপ্লিট করে ফেলব। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে সবার রাউটার এক রকম নয়। একেক জনের রাউটারে এক এক রকম ভাবে এই ম্যাক ফিল্টার অপশন টি দেওয়া হয়েছে। তাই আজকে একসাথে বেশ কয়েকটি রাউটারের ছবির মাধ্যমে বর্ণনা দিয়ে বুঝিয়ে দিব।


আমি কয়েকটা রাউটারের নাম সহ নিচে আলাদা আলাদা করে বর্ণনা দিয়ে দিচ্ছি। আপনি যে রাউটার চালান সেই রাউটারের অংশ টুকু পড়ে নিন।


ASUS রাউটারের ক্ষেত্রে:

প্রত্যেকটা স্টেপ খুব ভালো মত ফলো করুন। সম্পুর্ণ কাজ শেষ না হওয়ার আগে যেনো ভুলেও apply বাটনে চাপ না লাগে তাহলেই কিন্ত আপনার রাউটারের সর্বনাশ। সমস্ত স্টেপ ভালোমত চেক করার পর apply বাটনে ক্লিক করুন।


1. প্রথমে enable Mac filter কে অবশ্যই yes করে নিবেন।


2. Mac filter mode এ Accept ও reject থেকে accept সিলেক্ট করুন।


3. Client name (Mac address) এর বক্স এ প্রথমে আপনার মোবাইল এর ম্যাক এড্রেস(যারা ম্যাক সম্পর্কে জানেন না। অথবা ম্যাক অ্যাড্রেস বের করতে পারেন না তারা পোস্টের শেষ এর দিকে যেয়ে ম্যাক অ্যাড্রেস বের করা শিখে নিন।) টি খুব ভালো মত নির্ভুল ভাবে বড়ো হাতের অক্ষরে লিখে বসিয়ে নিন( সংখ্যায় জিরো “0” আর ইংরেজি বড়ো হাতের অক্ষরের ও”O” এর পার্থক্য বুঝে নিন কিবোর্ড থেকে। যেনো ম্যাক অ্যাড্রেস এ থাকলে লিখতে ভুল না হয়।).


4. এরপর প্লাস বাটন এ ক্লিক করুন। তাহলে দেখতে পারবেন আপনার মোবইল এর ম্যাক অ্যাড্রেস টি নিচে অ্যাড হয়ে গেছে।


এরপর যেই যেই মোবাইল গুলো তে আপনার wifi কানেক্ট রাখতে চান সেই প্রত্যেকটা মোবাইল গুলো এক এক করে হাতে নিন আর আর ম্যাক অ্যাড্রেস বের করে নির্ভুল ভাবে 3 নম্বর স্টেপ এর মত অ্যাড করে প্লাস বাটনে যোগ করে দিন। মনে রাখবেন যেই ফোনের ম্যাক এড্রেস একটা অক্ষর ও ভুল হবে। সেই ফোন এ internet connection দেওয়া যাবেনা।


5. সমস্ত ম্যাক অ্যাড্রেস সঠিক ভাবে বসানো হয়ে গেলে এপ্লাই বাটনে ক্লিক করুন(এপ্লাই করার আগে অবশ্যই ফাস্ট টু লাস্ট আরো একটা নির্ভুল রিভিশন দিয়ে নিবেন). এরপর নিচে আমার দেওয়া গাইডলাইন টি ফলো করুন।


Tp-link রাউটারের ক্ষেত্রে:

প্রত্যেকটা স্টেপ খুব ভালো মত ফলো করুন। সম্পুর্ণ কাজ শেষ না হওয়ার আগে যেনো ভুলেও save বাটনে চাপ না লাগে তাহলেই কিন্ত আপনার রাউটারের সর্বনাশ। সমস্ত স্টেপ ভালোমত চেক করার পর save বাটনে ক্লিক করুন।


1. বাটনে টেনে ম্যাক ফিল্টার enable করে নিবেন।


2. Allow wireless access only অপশন টি সিলেক্ট করুন।


3. Add বাটন এ ক্লিক করুন। এতে নিচে একটি ছোট বক্স ওপেন হবে। বক্স এ প্রথমে আপনার মোবাইল এর ম্যাক এড্রেস(যারা ম্যাক সম্পর্কে জানেন না। অথবা ম্যাক অ্যাড্রেস বের করতে পারেন না তারা পোস্টের শেষ এর দিকে যেয়ে ম্যাক অ্যাড্রেস বের করা শিখে নিন।) টি খুব ভালো মত নির্ভুল ভাবে বড়ো হাতের অক্ষরে লিখে বসিয়ে নিন( সংখ্যায় জিরো “0” আর ইংরেজি বড়ো হাতের অক্ষরের ও”O” এর পার্থক্য বুঝে নিন কিবোর্ড থেকে। যেনো ম্যাক অ্যাড্রেস এ থাকলে লিখতে ভুল না হয়।).


4. এরপর discripson এর জায়গায় নিজের নাম বা যেকোনো কিছু লিখে বসিয়ে দিন।


5. Enable this entry option টি সিলেক্ট করুন।


6. Ok তে ক্লিক করুন। দেখবেন আপনার ফোনের ম্যাক অ্যাড্রেস টি অ্যাড হয়ে গেছে।


এরপর যেই যেই মোবাইল গুলো তে আপনার wifi কানেক্ট রাখতে চান সেই প্রত্যেকটা মোবাইল গুলো এক এক করে হাতে নিন আর আর ম্যাক অ্যাড্রেস বের করে নির্ভুল ভাবে 3-6 নম্বর স্টেপ এর মত অ্যাড করে ok বাটনে প্রেস করে দিন। মনে রাখবেন যেই ফোনের ম্যাক এড্রেস একটা অক্ষর ও ভুল হবে। সেই ফোন এ internet connection দেওয়া যাবেনা।


7. সমস্ত ম্যাক অ্যাড্রেস সঠিক ভাবে বসানো হয়ে গেলে সেভ বাটনে ক্লিক করুন(সেভ করার আগে অবশ্যই ফাস্ট টু লাস্ট আরো একটা নির্ভুল রিভিশন দিয়ে নিবেন). এরপর নিচে আমার দেওয়া গাইডলাইন টি ফলো করুন।


Tenda রাউটারের ক্ষেত্রে:

প্রত্যেকটা স্টেপ খুব ভালো মত ফলো করুন। সম্পুর্ণ কাজ শেষ না হওয়ার আগে যেনো ভুলেও ok বাটনে চাপ না লাগে তাহলেই কিন্ত আপনার রাউটারের সর্বনাশ। সমস্ত স্টেপ ভালোমত চেক করার পর ok বাটনে ক্লিক করুন।


1. প্রথমে whitelist সিলেক্ট করুন।


2. ম্যাক এড্রেস এর বক্স এ প্রথমে আপনার মোবাইল এর ম্যাক এড্রেস(যারা ম্যাক সম্পর্কে জানেন না। অথবা ম্যাক অ্যাড্রেস বের করতে পারেন না তারা পোস্টের শেষ এর দিকে যেয়ে ম্যাক অ্যাড্রেস বের করা শিখে নিন।) টি খুব ভালো মত নির্ভুল ভাবে বড়ো হাতের অক্ষরে লিখে বসিয়ে নিন( সংখ্যায় জিরো “0” আর ইংরেজি বড়ো হাতের অক্ষরের ও”O” এর পার্থক্য বুঝে নিন কিবোর্ড থেকে। যেনো ম্যাক অ্যাড্রেস এ থাকলে লিখতে ভুল না হয়।).


3. এরপর প্লাস বাটন এ ক্লিক করুন। তাহলে দেখতে পারবেন আপনার মোবইল এর ম্যাক অ্যাড্রেস টি নিচে অ্যাড হয়ে গেছে।


এরপর যেই যেই মোবাইল গুলো তে আপনার wifi কানেক্ট রাখতে চান সেই প্রত্যেকটা মোবাইল গুলো এক এক করে হাতে নিন আর আর ম্যাক অ্যাড্রেস বের করে নির্ভুল ভাবে 2 নম্বর স্টেপ এর মত অ্যাড করে প্লাস বাটনে যোগ করে দিন। মনে রাখবেন যেই ফোনের ম্যাক এড্রেস একটা অক্ষর ও ভুল হবে। সেই ফোন এ internet connection দেওয়া যাবেনা।


4. সমস্ত ম্যাক অ্যাড্রেস সঠিক ভাবে বসানো হয়ে গেলে ওকে বাটনে ক্লিক করুন(ওকে করার আগে অবশ্যই ফাস্ট টু লাস্ট আরো একটা নির্ভুল রিভিশন দিয়ে নিবেন). এরপর নিচে আমার দেওয়া গাইডলাইন টি ফলো করুন।


D-Link রাউটারের ক্ষেত্রে:

প্রত্যেকটা স্টেপ খুব ভালো মত ফলো করুন। সম্পুর্ণ কাজ শেষ না হওয়ার আগে যেনো ভুলেও save setting বাটনে চাপ না লাগে তাহলেই কিন্ত আপনার রাউটারের সর্বনাশ। সমস্ত স্টেপ ভালোমত চেক করার পর save setting বাটনে ক্লিক করুন।


1. প্রথমে turn ম্যাক ফিল্টারিং অফ লেখা থাকে। সেটাকে ক্লিক করলে তিনটি অপশন আসবে। Turn mac filtering on and allow computer অপশন টি সিলেক্ট করুন।


2. নিচের 0 লেখা বক্স গুলো তে এক এক করে প্রথমে আপনার নিজের ফোনের এর পরে আপনার রাউটারে যত গুলো মোবাইল কানেক্ট থাকবে সব গুলো মোবাইলের ম্যাক এড্রেস(যারা ম্যাক সম্পর্কে জানেন না। অথবা ম্যাক অ্যাড্রেস বের করতে পারেন না তারা পোস্টের শেষ এর দিকে যেয়ে ম্যাক অ্যাড্রেস বের করা শিখে নিন।) খুব ভালো মত নির্ভুল ভাবে বড়ো হাতের অক্ষরে লিখে বসিয়ে নিন( সংখ্যায় জিরো “0” আর ইংরেজি বড়ো হাতের অক্ষরের ও”O” এর পার্থক্য বুঝে নিন কিবোর্ড থেকে। যেনো ম্যাক অ্যাড্রেস এ থাকলে লিখতে ভুল না হয়।).


মনে রাখবেন যেই ফোনের ম্যাক এড্রেস একটা অক্ষর ও ভুল হবে। সেই ফোন এ internet connection দেওয়া যাবেনা।

3. সমস্ত ম্যাক অ্যাড্রেস সঠিক ভাবে বসানো হয়ে গেলে সেভ সেটিং বাটনে ক্লিক করুন(সেভ করার আগে অবশ্যই ফাস্ট টু লাস্ট আরো একটা নির্ভুল রিভিশন দিয়ে নিবেন). এরপর নিচে আমার দেওয়া গাইডলাইন টি ফলো করুন।


এখন আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ম্যাক এড্রেস বের করতে জানেন না। যারা ম্যাক এড্রেস বের করতে জানেন না তারা নিচের রুলস টি ফলো করুন:


ম্যাক এড্রেস বের করার নিয়ম:


1. প্রথমে আপনার ফোনের সেটিং এ যাবেন।


2. সেটিং এর সার্চ অপশন mac address লিখে সার্চ করুন।


3. সেখান থেকে যেই রেজাল্ট গুলো আসবে। এদের মধ্যে থেকে ১ম রেজাল্ট টি সিলেক্ট করুন।


4: আপনি নিজেই আপনার মোবাইলের ম্যাক এড্রেস দেখতে পারবেন।


(যাদের সেটিং এ সার্চ অপশন নেই তারা about phone থেকে স্ট্যাটাস এ দেখতে পারেন। অথবা ওয়াইফাই সেটিং টি ভালোমত খুঁজে দেখতে পারেন)


ট্রিক টি তো কমপ্লিট হয়েই গেলো।এখন আপনি খেয়াল করে দেখুন যে আপনি যে কয়টা ফোনের ম্যাক অ্যাড্রেস রাউটারে বসিয়েছেন আপনার রাউটার ঠিক সেই কয়টা ফোনেই চলছে। অন্য কোনো ফোন এ আপনি আপনার রাউটারের পাসওয়ার্ড বসিয়ে দিলেও সেই ফোনে আপনার ওয়াইফাই কানেক্ট হবেনা। যদি অন্য কোনো মোবাইলে ওয়াইফাই কানেক্ট করতে চান তাহলে সেই ফোন টি হতে নিয়ে ম্যাক অ্যাড্রেস টি বের করবেন। এরপর আপনার মোবাইল দিয়ে এডমিন প্যানেল এ যেয়ে ম্যাক ফিল্টার অপশন থেকে সেই ফোনের ম্যাক অ্যাড্রেস টি ও বসিয়ে নিন এর পর সেভ করে নিন। এরপর সেই মোবাইলে পাসওয়ার্ড বসিয়ে কানেক্ট করলে কানেক্ট হবে।


আজ এই পর্যন্তই থাকুক। সকলেই ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন। আর কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানান। আর আমার পরবর্তী পোস্ট টি কিসের উপর চান সেটি আমাকে জনিয়ে দিন কমেন্টে, জিমেইল এ, অথবা টুইটারে।
জিমেইল: marufkhan1215@gmail.com
Twitter: 1215maruf

The post এবার পাসওয়ার্ড জানলেও কেউ আপনার ওয়াইফাই কানেক্ট করতে পারবে না (পর্ব-২) appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/nUP426l
via IFTTT

নতুন ফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই করা উচিত এবং ভালো ফোন চেনার উপায়

নতুন ফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই করা উচিত এবং ভালো ফোন চেনার উপায়

Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । আশা করি পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন । তো বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক

মোবাইল কেনার আগে ২০ টি জরুরি টিপস

বেশ কিছু অর্থ খরচ করে শখের জিনিসটি কিনতে গেলে নানা দোটানায় পড়তে হয়। এটা ভালো হবে তো, নাকি ওটা? এমন আরো অনেক প্রশ্ন। এ যুগে অতিপ্রিয় মোবাইল ফোনসেট কেনার সময় তো চিন্তার শেষ নেই। তাই আপনাদের মস্তিষ্কের চাপ কিছুটা কমিয়ে দিতে মোবাইল ফোনসেট কেনার ২০টি টিপস দেওয়া হলো।

১. ডিজাইন নিয়ে একটু চিন্তা করুন

স্মার্ট ফোনের ক্ষেত্রে ডিজাইনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে কারো কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার কিছু নেই। এটা একান্ত নিজের রুচির ব্যাপার। বাজারের সব স্মার্ট ফোনের নজরকাড়া ডিজাইন রয়েছে। আবার বিভিন্ন কেস রয়েছে ফোনটিকে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য। কাজেই নিজের ব্যক্তিগত চাহিদা এবং রুচি অনুযায়ী ডিজাইন পছন্দ করাই ভালো।

২. ওজন এবং অনুভূতি

মোবাইল ফোনসেটের এ বৈশিষ্ট্য নিয়ে কেউ তেমন মাথা ঘামায় না। অনেক ফোন আছে যা পকেটে থাকলে আপনি বুঝতেই পারবেন না যে কিছু একটা রয়েছে। মোবাইল ফোনসেট যত বড় হয় সাধারণত এর ওজনও তত বেশি হয়। তবে এসব দেখার আগে খেয়াল করবেন ফোনসেটে ব্যাটারি লাগানো রয়েছে কি না। কারণ ব্যাটারির ওজনটিও বেশ হয়।

৩. পর্দার আকারটিই সবকিছু নয়

স্ক্রিনের আকারটি সবাই দেখেন নতুন মোবাইল কেনার সময়। এখন বড় স্ক্রিনের মোবাইল বেশি জনপ্রিয়। তবে সহজে বহন করতে চাইলে ছোট পর্দার মোবাইল নেওয়া উচিত। চার ইঞ্চি বা সাড়ে চার ইঞ্চি বা পাঁচ ইঞ্চি পর্দার মোবাইল ফোনেরও বেশ চাহিদা রয়েছে।

৪. ডিসপ্লের গুণগত মান

পর্দার গুণগত মান অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়। সবচেয়ে ভালো মানের ডিসপ্লে ১০৮০পি (১৯২০ x ১০৮০ পিক্সেলস)। তবে এই ডিসপ্লেযুক্ত ফোনের দামটিও বেশ চড়া হবে। খেয়াল করে দেখতে হবে ভিন্ন ভিন্ন কোণ থেকে দেখলে ছবি পরিষ্কার দেখা যায় কি না। সাধারণ মানের মোবাইলের ডিসপ্লে ৭২০পি-এর কম হয়ে থাকে।

৫. অপারেটিং সিস্টেম

মৌলিক কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় সিস্টেম। এদিকে আইফোনের রয়েছে আইওএস যার সাম্প্রতিকতম সংস্করণ হলো আইওএস ৭। আবার উইন্ডোজ অপারেটিংয়ের ভক্তের সংখ্যাও নেহায়েতই কম নয়। পছন্দেরটি বেছে নিন। কারণ অপারেটিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করেই গোটা ফোনের সব কার্যক্রম নির্ধারিত হয়।

৬. থ্রি-জি নাকি ফোর-জি

আমাদের দেশে সবেমাত্র থ্রি-জি কানেকশন চালু হয়েছে। ডাটা কানেকশনের গতি নির্ভর করে এর ওপর। আরো দ্রুত কানেকশন দেয় ফোর-জি। এ যুগের স্মার্ট ফোনের জন্য থ্রি-জি কানেকশন নিতে পারে এমন মোবাইল বেশি ভালো।

৭. ব্যাটারির শক্তি

ব্যাটারির শক্তি নির্ধারিত হয় মোবাইল ফোনটি কেমন তার ওপর ভিত্তি করে। তবে বড় মাপের স্ক্রিনের মোবাইল বেশি ব্যাটারি শক্তি ক্ষয় করে। তাই শক্তিশালী ব্যাটারি প্রয়োজন হবে মোবাইলটি অনেক সময় ধরে চালু রাখার জন্য। এখন ৩০০০ এমএএইচ সবচেয়ে বেশি শক্তির ব্যাটারি হিসেবে বাজারে চালু রয়েছে।

৮. সফটওয়্যার আপডেট রাখা

ফোনের সফটওয়্যার প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। আপনিও যদি নিজের ফোনের সফটওয়্যারগুলো আপডেট রাখেন তাহলে যন্ত্রটি সুন্দরমতো কাজ করবে। নয়তো নানা ভেজাল করবে যেকোনো কাজ করতে। নতুন কোনো অ্যাপস সাপোর্ট করবে না এবং ফোনটি ধীরগতির হয়ে যাবে।

৯. ২ জিবি র‌্যাম নেওয়ার চেষ্টা করুন

ফোনের কার্যক্রমে দ্রুততা দেবে র‌্যাম। ফোন কিনতে বেশ কিছু অর্থ ব্যয় করলে এক জিবি র‌্যামই যথেষ্ট। তবে অল্প কিছু অর্থযোগে বা পছন্দ পরিবর্তনে ২ জিবির ব্যবস্থা করা গেলে অনেক ভালো। আধুনিক মোবাইলগুলো ৩ জিবি পর্যন্ত র‌্যাম নিয়ে বাজারে আসছে।

১০. ক্যামেরা রেজ্যুলেশন অতি দরকারি নয়

ক্যামেরা রেজ্যুলেশনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটিও নয়। কারণ ভালো মানের ছবি তোলার কাজ ক্যামেরার, মোবাইল ফোনের নয়। বেশি রেজ্যুলেশনের মোবাইল ক্যামেরার ছবি কিছুটা ভালো আসে। কিন্তু তা ক্যামেরার মতো নয়। তাই অন্য বিষয় বাদ দিয়ে ফোনে ক্যামেরা রেজ্যুলেন বেশি খোঁজাটা বোকামি।

১১. শক্তপোক্ত ফোন

স্মার্ট ফোনের জন্য তা কতটা শক্তপোক্ত তা জরুরি বিষয়। তা ছাড়া পর্দাতে সহজে দাগ যেন না পড়ে সে জন্য স্ক্র্যাচ রেজিস্ট্যান্ট গ্লাস রয়েছে অনেক ফোনে। হাত থেকে পড়ে গেলেই ভেঙে বা ফেটে যাবে না, অন্তত তেমন তো হতে হবে ফোনটিকে।

১২. ব্লু টুথ বেশ জরুরি

যাই কিনুন, দেখে নিন ব্লু টুথ রয়েছে কি না। এটি একটি দারুণ জিনিস। ব্লু টুথ ছাড়া অন্য কোনো মোবাইলের সঙ্গে আপনি কিছুই লেনদেন করতে পারবেন না। এখনকার দামি সব ফোনেই ব্লু টুথ রয়েছে। তবে কমদামি মোবাইল কিনতে গেলে একটু দেখে নিন তা রয়েছে কি না।

১৩. এনএফসি থাকলে ভালো

এনএফসি বা নেয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বেশ প্রয়োজনীয় বিষয়। অন্য কোনো স্মার্ট ফোন বা ট্যাবের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদানের জন্য এনএফএস দরকার হয়। এ ছাড়া আপনার কেনাকাটার জন্য কোনো ডিজিটাল ওয়ালেট অথবা দাম পরিশোধের সাপোর্টেড প্রসেসর থাকলে তার ব্যবহার এনএফএস-যুক্ত মোবাইল সহজ করে দেবে। অ্যাপলের নিজস্ব এনএফএস প্রযুক্তি রয়েছে, যার নাম এয়ারড্রপ।

১৪. ঝামেলাবিহীন চার্জের জন্য ওয়্যারলেস চার্জিং

তার ছাড়া চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা অবশ্য খুব প্রয়োজনীয় কিছু নয়। তবে যেখানে সেখানে প্লাগ পয়েন্ট না থাকার সমস্যায় ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম বেশ মজার বিষয়।

১৫. পপুলার রিভিউ ও রেটিং সাইট ব্যবহার করুন

ইন্টারনেট থাকলে নানা সাইটে ঢুঁ মারতেই হয়। তবে ম্যালওয়্যারের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পপুলার রিভিউ ও রেটিং সাইটে ঘোরাফেরা করবেন। নইলে বিপদ।

১৬. অ্যাক্সেসরিজ

অ্যাক্সেসরিজ সব মোবাইলের সঙ্গেই দেওয়া হয়। তবে অ্যাক্সেসরিজ দেখে ফোন পছন্দ করার দরকার নেই। স্মার্ট অ্যাক্সেসরিজ বেশ আকর্ষণীয় দেখায়। ভালো মানের ফোনের অ্যাক্সেসরিজও বেশ ভালো হয়।

১৭. দাম

এটা আসল বিষয়। এমনিতেই মোবাইল ফোনসেটের দাম যত বেশি হবে, তার সবকিছুই তত ভালো হবে। তবে মোবাইল ফোনসেট কেনার আগে একই মডেলের অন্য কোনো সংস্করণ খুব শিগগিরই বাজারে আসলে তা থেকে কোনো সুবিধে পান কি না ভেবে নিতে হবে।

১৮. কন্ট্রাক্ট ফোন নেওয়ার জন্য

ইউরোপ-আমেরিকাতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন শর্তের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনসেট কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের দেশেও অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো এমন অফার দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি সুবিধা দিচ্ছে এবং মোবাইলগুলোর মডেলের সঙ্গে দাম ও সুবিধাগুলোর তুলনা করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী নেবেন।

১৯. অ্যাপ্লিকেশন

মোবাইল ফোনসেটেরর অ্যাপস প্রতিনিয়ত এত বেশি বানানো হচ্ছে যে, পছন্দ করতে গেলে আপনার মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হবে। ইচ্ছামতো অ্যাপস ডাউন লোড করে ব্যবহার করুন। শুধু একটি বিষয় নজরে রাখবেন। মোবাইল ফোনসেটটি যেসব অ্যাপস সাপোর্ট করে তাই ব্যবহার করুন। আর যেসব অ্যাপস আপনার মোবাইলের জন্য নয় তা অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন না। তা ছাড়া মোবাইল ফোনসেট অনুযায়ী আলাদাভাবে অ্যাপসের কালেকশন ইন্টারনেটে দেওয়া থাকে। সেখান থেকেই ফোনটির জন্য অ্যাপস বাছাউ করে নেওয়া উচিত।

২০। বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে নিন

অবশ্যই বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে নিন আপনি যে মোবাইল কেনবেন সেটির সম্পর্কে তাহলে অনেক তথ্য পেতে পারেন ।
কেনার আগে ভালো স্মার্টফোন চেনার উপায়

স্মার্টফোন হঠাৎ কিনে ফেললেই হলো না। অনেক কিছু দেখে-শুনে-বুঝে তবেই কেনা উচিত ফোন। তা ছাড়া আপনি ঠিক কীভাবে ফোনটি ব্যবহার করবেন তার ওপরও নির্ভর করে স্ক্রিন সাইজ, র‌্যাম এবং ডিসপ্লে কেমন হবে। ফোন কেনার আগে মাথায় রাখবেন এই টিপসগুলো :

১. যদি বাজেট অনেকটা বেশি থাকে, আইফোন কেনাই ভালো। তবে সস্তাদামের সেকেন্ডহ্যান্ড বা অনেক পুরনো ভার্সনের নয়। আপডেটেড ভার্সনের দাম অনেক। অত টাকা পকেটে না থাকলে অ্যানড্রয়েড কিনুন।

২. ব্ল্যাকবেরি যে কিনবেন না তা আর নিশ্চয়ই নতুন করে বলতে হবে না। ঠিক তেমনই উইনডোজ ফোন কেনার আগে দুইবার ভাববেন। প্রথমত, মাইক্রোসফট স্টোরে বেশি অ্যাপ থাকে না আর যদি শুধু ফোন করা আর ফোন ধরার জন্যেই ফোন কিনতে হয় তবে আর দামি স্মার্টফোন কেন, সাধারণ ফোন কেনাই ভালো।

৩. ফোন কেনার আগে সবচেয়ে প্রথমে যেটি দেখবেন সেটি হলো প্রসেসর। ভালো প্রসেসর মানেই ফোন হবে সুপারফাস্ট, গেম খেলার সময়ে ফোন হ্যাং করবেন না এবং ফটো এডিটিং হবে তাড়াতাড়ি। স্ন্যাপড্র্যাগন ৬০০ সিরিজের প্রসেসর থাকে মাঝারি রেঞ্জের ফোনে কিন্তু সবচেয়ে ভালো হলো কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ এবং ৮১০ প্রসেসর। আইফোনের ক্ষেত্রে ৬৪ বিট, এ৯ চিপ হলো বেস্ট যা রয়েছে আইফোন সিক্সে।

৪. ভারতে এখন ফোরজি ডেটা কানেকশন এসে গিয়েছে তাই এখন নতুন ফোন কিনলে ফোরজি সাপোর্ট করবে এমন ফোন কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।

৫. র‌্যাম হলো আর একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি পকেটের জোর থাকে তবে ৪ জিবি র‌্যামের ফোন কেনাই ভালো। নাহলে অন্তত ২ জিবি র‌্যাম যেন থাকে। কারণ এখন মাঝারি রেঞ্জের সব ফোনেই ২ জিবি র‌্যাম থাকে এমনকী আইফোন সিক্সেও তাই।

৬. র‌্যাম, ফোরজি, প্রসেসরের পরই দেখবেন ডিসপ্লে। চেষ্টা করবেন অ্যামোলেড ডিসপ্লের ফোন কিনতে। চড়া রোদে দাঁড়ালেও পরিষ্কার দেখতে পাবেন স্ক্রিন। কোয়াড এইচডি ২৫৬০x১৪৪০ পিক্সেলের ফোনগুলির দাম অনেক বেশি। মাঝারি রেঞ্জের ফোন কিনলে রেজিলিউশন যেন অন্ততপক্ষে ১২৮০x৭২০ পিক্সেল হয়।

৭. এর পরই দেখবেন স্টোরেজ কেমন। কখনো এক্সপ্যান্ডেবল স্টোরেজ নেই এমন ফোন কিনবেন না। যাঁরা স্মার্টফোন ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারেন, তাঁরা প্রচুর অ্যাপ ডাউনলোড করেন। এর জন্য অনেকটা স্টোরেজ স্পেস লাগে। যাতে প্রয়োজনে মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, সেই অপশনটি খোলা রাখবেন। অন্ততপক্ষে ১৬ জিবি ইন্টারনাল মেমরি আছে এমন ফোনই কিনবেন।

৮. ফ্রন্ট ক্যামেরা নেই এবং এলইডি ফ্ল্যাশ নেই এমন ফোন না কেনাই ভালো। এখন মাঝারি রেঞ্জের ফোনে স্ট্যান্ডার্ড ১৩ মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা থাকে। আইফোন সিক্সএস প্লাস, গ্যালাক্সি এস৭, গ্যালাক্সি এস৭ এজ, এইচটিসি ১০-এর ক্যামেরা খুবই ভালো। আরও মজার এলজি জি৫। এতে দুই রকমের রিয়ার ক্যামেরা সেটিং রয়েছে। একটি সাধারণ এবং অন্যটি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল শুটের জন্য।

৯. ব্যাটারি লাইফ হলো আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একবার ফুলচার্জ দেওয়ার পর যে সমস্ত ফোরজি ফোনে টানা ৮ ঘণ্টা নেট সার্ফিং করা যায়, সেই ফোনই সবচেয়ে ভালো। ব্যাটারি লাইফ গড়ে ৩০০০ এমএএইচ হলেই ভালো। মাঝারি রেঞ্জের ফোনে ২৫০০ এমএএইচ-এর কম ব্যাটারি লাইফের ফোন না কেনাই ভালো।

১০. ওয়াই-ফাই সব স্মার্টফোনেই থাকে। চেষ্টা করবেন ব্লু-টুথ ৩.০ রয়েছে এমন ফোন কিনতে কারণ এই ভার্সনটি থাকলে স্মার্টওয়াচের সঙ্গে মোবাইলটি কানেক্ট করা যায়। তা ছাড়া জিপিএস রয়েছে এমন ফোন কেনাই ভালো যাতে ফোন হারিয়ে গেলে ট্র্যাক করতে সুবিধা হয়। আর যদি ম্যাগনেটোমিটার সেন্সর থাকে তবে স্মার্টফোন কম্পাসেরও কাজ করবে।

১১. ডলবি অ্যাটমোস সারাউন্ড সাউন্ড এখন স্মার্টফোনের অন্যতম লেটেস্ট ফিচার। লেনোভোর সাম্প্রতিক প্রায় সব ফোনেই এই ফিচার রয়েছে। যাঁরা ফোনে ভিডিও দেখেন, গান শোনেন বা সিনেমা দেখেন তাঁরা ডলবি স্পিকার রয়েছে এমন ফোনসেট কিনলেই ভালো।

১২. ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি, শ্যাটারপ্রুফ, স্ক্র্যাচ-প্রুফ স্ক্রিন, গোরিলা গ্লাস, ওয়াটারপ্রুফ, এনএফসি ট্যাগ এই সবকিছু অত্যাধুনিক স্মার্টফোন ফিচার্স। বাজেট যত বাড়বে, ততই এই সবকিছু যোগ হবে ফোনের ফিচারে। যদি অ্যাফর্ড করতে পারেন তবে এই সমস্ত সুবিধা রয়েছে এমন ফোনই কিনবেন। আবার অনেক বাজেট স্মার্টফোনেও এগুলির মধ্যে একটি দুটি পাওয়া যায়।

তো আজকে এই পর্যন্তই । মানুষ মাত্রই ভুল হয় । তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আপনি চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে join করতে পারেন । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে  আমার সাথে যোগাযোগ করবেন । 

The post নতুন ফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই করা উচিত এবং ভালো ফোন চেনার উপায় appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/ojakUrm
via IFTTT

GTA San Andreas এর Android [Full] 🥵 ভার্সন ডাউনলোড করে নিন।

GTA San Andreas এর Android [Full] 🥵 ভার্সন ডাউনলোড করে নিন।

GTA San Andreas

GTA বা Grand Theft Auto এর গেম গুলোর মধ্যে San Andreas এর জনপ্রীয়তার মাত্রা টা অন্য লেভেল এর।

এর স্টোরী ,Gameplay , Dialogue একেক টা যেনো মাস্টারপিস।

অনেকে শুধু এটি কম্পিউটার এই খেলেছেন । মোবাইল এ খেলেন নি।

*** অথবা অনেক এ জানেন ও না যে GTA San Andreas এর মোবাইল ভার্সন ও রয়েছে  যা হুবহু PC এর ভার্সন এর মতই। সব মিশন যাতে রয়েছে।

প্লে স্টোর এ এটির দাম 6.99 $।।

আপনারা অনলাইন খেলতে চাইলে Play Store থেকে নিতে পারেন ।

কিন্তু টাকা ছাড়া অফলাইন মিশন গুলো খেলতে এখনই ডাউনলোড করে নিন গেম টি।

Downloading Part

GTA Apk [Telegram Link

GTA MOD apk [Telegram Link]

OBB File [Google Drive Link]

এখান থেকে আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী ডাউনলোড করুন । [Telegram Link]

*** MOD ভার্সন টি ইনস্টল দেয়ার পর আবার GTA San Andreas ইনস্টল হবে। চিন্তা করবেন না। কারো যদি MOD install না হয় তাহলে শুধু APK টা ইনস্টল করুন।

gta san andreas

*** এবার OBB ফাইল টি zArchiever দিয়ে Extract করে Internal Storage এর Android ফোল্ডার এর obb ফোল্ডার এর ভীতরে রাখুন।

gta san andreas mobile

*** এরপর গেম টি অন করুন। প্রথমবার হয়তো কিছুক্ষন সময় নিবে ।

*** এরপর আপনার ইচ্ছা মত সেটিং করে নিয়ে খেলতে থাকুন পুরো গেম টি। এটি কোনো লাইট ভার্সন নয়। এখানে পুরো গেম টি রয়েছে। আপনি একটা একটা করে সব মিশন খেলতে পারবেন।

*** আপনার স্মৃতী বিজরীত কম্পিউটার গেম GTA San Andreas মোবাইল এ খেলার পর অবশ্যই আপনার মন ভালো হয়ে যাবে।

** এর আগে হয়ত অনেক যায়গা থেকে ডাউনলোড করে ইনস্টল করতে পারেন নি বা ইনস্টল হয় নি। আবার হয়তো অনেকে শুধু  Lite ভার্সন টি পেয়েছে।

** কিন্তু আমি আজকে গেমটির ফূল ভার্সন নিয়েই হাজির হয়েছি  ।🥰

***** আমি আমার ব্যাক্তিগত দুইটি ফোন এ গেম টিকে টেস্ট করেছি।

*** একটি Redmi Note 8 Pro যা Android 11 এ রান করে ।

MOD Install করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে  । আপনার ক্ষেত্রে সমস্যা না ও হতে পারে। সমস্যা হলেও শুধু APK তা ডাউনলোড দিবেন কোনো সমস্যা ছারাই রান করতে পারবেন।

*** আরেকটি Huawei Nova 2i যা Android 8 এ রান করে [এটাতে MOD ও খুব ইজিলি ইন্সটল হয়েছে ] ।

কোনো প্রোকার Crash , Bug ছাড়াই গেম টি চালু হয়েছে।
আপনাদের ক্ষেত্রে প্রবলেম হলে, অথবা কোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে অবশ্যই জানাবেন।

*** GTA San Andreas এর Cheat Code ফোন এও রান করার ট্রিক্স জানতে চাইলে অবশ্যই জানান।

*** এছাড়া আপনাদের সবার প্রীয় GTA Vice City এর ফুল ভার্সন নিয়েও পোস্ট করবো কি না তাও আমাকে কমেন্ট এ জানান।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। নতুন পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই হাজীর হবো। আল্লাহ হাফেজ।

ফেসবুক এ আমি

The post GTA San Andreas এর Android [Full] 🥵 ভার্সন ডাউনলোড করে নিন। appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/K5jCF1N
via IFTTT

সরকারিভাবে ফ্রি ১৩৫০০ টাকা সহ ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্স গ্রহণ করুন।

সরকারিভাবে ফ্রি ১৩৫০০ টাকা সহ ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্স গ্রহণ করুন।

সরকারিভাবে প্রদানকৃত বিভিন্ন বিষয়ের উপর ফ্রি কোর্স নিয়ে আমি এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। তবে আজকরে পোস্টটি একটু ভিন্ন৷ যদিও এটি অন্যান্য সরকারিভাবে প্রদানকৃত ফ্রি প্রশিক্ষণের মতই একটি। এটি ভিন্ন বলার কারণ হচ্ছে আগেরগুলি সর্বজনীন থাকলেও এটি একটি নির্ধারিত ধর্ম ও নির্ধারিত শ্রেণির পেশার বা মানুষের জন্য। কারণ আজকের টপিকের বিষয়বস্তু হচ্ছে শুধুমাত্র যারা মুসলিম এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ালেখা করেছেন তাদের জন্য। এইবার মূল কথায় আসি। আপনাদের মধ্যে যাদের আশা বা স্বপ্ন রয়েছে ইমাম হওয়ার বা ইমামতি করার। তারা চাইলে সরকারিভাবে বর্তমান সময়ের যুগোপযোগী ইমাম হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন। এতে করে আপনি আপনার স্কিল ডেভেলপ করতে পারবেন।

ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্সঃ
বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে যুগোপযোগী ইমাম তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কোর্সের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। যার মধ্যে একটি হলো আমাদের আজকের বিষয়ের ৪৫ দিনের এই কোর্স।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশঃ

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ৪৫ দিন ব্যাপি এই ফ্রি কোর্সটি অতি শীঘ্রই চালু হবে এই মর্মে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি এর পরিচালকের গত ২৬ তারিখের স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। যাতে এই কোর্সটি গ্রহণ করার জন্য কিভাবে কি করতে হবে সকল কিছু উল্লেখ রয়েছে। এইবার চলুন নিচ থেকে এর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ইমাম প্রশিক্ষণ গ্রহণের আবেদনের প্রক্রিয়াঃ
ইমাম প্রশিক্ষণের কোর্সটি গ্রহণ করতে আপনাকে সর্বপ্রথম স্ব হস্তে লিখে আবেদন করতে হবে এবং সেটি স্ব শরীরে গিয়ে জেলা অথবা বিভাগীয় অফিসে জমা দিয়ে আসতে হবে।

এখন কথা হচ্ছে কিভাবে বা কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি নিজ হাতে আবেদনের দরখাস্তটি লিখবেন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ভর্তি ফরম আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে। এখন কোত্থেকে করতে হবে এই বিষয়ে কিছু বলা নাই। তবে হ্যাঁ আমি ধারনা করে নিতে পারি যে আপনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় অথবা জেলা পর্যায়ের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে তাদের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া এই কোর্সের জন্য আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে এতে তথ্য অনুযায়ী পূরণ করে দিতে পারেন। অথবা এইভাবে দেখে দেখে পুরো বিষয়টি অর্থাৎ আবেদনটি আপনি নিজ হাতে লিখতে পারেন। (যদি সম্ভব হয় দুটো পদ্ধতিই অনুসরণ কইরেন যেটা কাজে লাগে।)

আবদেনপত্র ডাউনলোডঃ
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া এই কোর্সের জন্য আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

আবেদনপত্র লেখার পর করণীয়ঃ
নিজ হাতে আবেদনপত্রটি লিখার পর আপনি নিজে স্ব শরীরে আপনার জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিসে বা কার্যালয়ে গিয়ে জমা দিয়ে আসবেন। এছাড়াও সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যাবেন। যেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

আবেদন করার ফিঃ
এই কোর্সের জন্য আবেদন করতে কোন প্রকার ফি বা টাকা পয়সার দরকার নেই। অর্থাৎ একদম ফ্রিতে আপনি এই কোর্সটির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন করার যোগ্যতাঃ

  • বর্তমানে যারা বিভিন্ন মসজিদে ইমাম, সহকারী ইমাম ও মুয়াজ্জিন হিসেবে কর্মরত আছেন।
  • আপনার বয়স ২০-৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং সুস্থ ও সবল দেহের অধিকারী হতে হবে।
  • মাদ্রাসা পড়ুয়া হতে হবে এবং নূন্যতম দাখিল পাশ হতে হবে।
  • হাফেজ ক্বারিদের ক্ষেত্রে ভালো বাংলা জানতে হবে। তাহলে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল বলে গণ্য হবে।
  • কোভিড-১৯ এর দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করতে হবে।

আবেদন করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

  • নিজ হাতে পূরণকৃত বা লিখিত আবেদন কপি।
  • এক কপি সত্যায়িত রঙ্গিণ ছবি।
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সার্টিফিকেট বা সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
  • ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়র অথবা ওয়ার্ডের কমিশনার বা মেম্বারের কাছ থেকে ইমামতি করার স্বপক্ষে প্রত্যয়নপত্র বা প্রমাণপত্র নিতে হবে।

উপরোল্লিখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনাকে আবেদন করার পর যখন আপনার জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আবেদন কপি জমা দিতে যাবেন তখন সাথে করে এগুলো নিয়ে যাবেন। অর্থাৎ উক্ত কাগজগুলিও আপনার জমা দিতে হবে।

চুড়ান্ত বাছাইয়ের পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পদক্ষেপঃ
আবেদন কপি জমা দিয়ে আসার পর এখান থেকে বাছাই করা হবে। তো এই চুড়ান্ত বাছাইয়ের মধ্যে যদি আপনি নির্বাচিত হয়ে যান তাহলে আরো কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আপনাকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সার্টিফিকেট বা সনদপত্রের মূল কপি।
  • আর যদি শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট বা সনদপত্রের মূল কপি না থাকে তাহলে আপনার শিক্ষা
  • প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে প্রশংসাপত্রের মূল কপি।
  • চূড়ান্তভাবে বাছাইতে নির্বাচিত হওয়ার পর কার্যালয় থেকে একটি ছুটির ফরম দেওয়া হবে। উক্ত ফরমে
  • আপনার মসজিদের সভাপতি বা সেক্রেটারির কাছ থেকে ৪৫ দিনের ছুটির অনুমোদন নিতে হবে।
  • কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিরত থাকলে সেখানের কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র।
  • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত রঙ্গিন ছবি।
  • প্রশিক্ষণ চলাকালীন হোস্টেলে অবস্থান করতে হবে।

প্রশিক্ষণ শেষে ভাতা প্রদানঃ
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে ইমাম প্রশিক্ষণের কোর্সটি সম্পন্ন করার পর আপনাকে দৈনিক ভাতা প্রদান হিসেবে ৩০০ টাকা করে ৪৫ দিন অনুযায়ী মোট ১৩৫০০ টাকা প্রদান করা হবে। যদিও এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ নেই তবে এই কোর্সের নিয়মানুযায়ী এবং তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী আপনি কোর্স সম্পন্ন করার পর ১৩৫০০ টাকা ভাতা বা বকশিস পাবেন। তবে প্রাথমিক নির্বাচনের পর সেখান থেকে এই ব্যাপারে জেনে নিতে পারবেন।

আবেদনের সময়সীমাঃ
আগামী ০৪/০৭/২০২২ পর্যন্ত আপনি উক্ত আবেদনটি করতে পারবেন।

প্রাথমিক বাছাইয়ের তারিখঃ
০৪/০৭/২০২২ তারিখে আবেদন কপি জমা দেওয়ার পর এর পরেরদিন ০৫/০৭/২০২২ তারিখে সকাল ১০টা থেকে প্রাথমিক বাছাই শুরু হবে।

প্রশিক্ষণ শুরুর তারিখঃ
বিজ্ঞপ্তিতে প্রশিক্ষণ শুরুর তারিখ নিয়ে কোন আলোচনা করা হয়নি। তবে প্রাথমিক নির্বাচনের দিন আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

গুরুত্বপূর্ণ কথাঃ
এই কোর্স সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য প্রাথমিক নির্বাচনের তালিকায় যদি আপনার নাম নির্বাচিত হয়। তাহলে আপনাকে কিছু ফরম দেওয়া হবে সে ফরম গুলোর মধ্যে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। অথবা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় বা জেলা কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারবেন।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।

The post সরকারিভাবে ফ্রি ১৩৫০০ টাকা সহ ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্স গ্রহণ করুন। appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/1qzZ7A0
via IFTTT

নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ]

নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ]

Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । আশা করি পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন । তো বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক তো যারা আগের পার্ট পরেননি তারা এই লিংক এ গিয়ে পরে আসুন ।
এবার আগের পার্ট এর পর ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

এক মূহুর্ত দেরি না করে সঠান হাঁটতে লাগলাম।সিড়ি ভেঙ্গে নিচে
নামার সময়ও কেন যেন মনে হচ্ছিলো আঁড়ালে থেকে
কেউ আমার দিকে দৃষ্টি রাখছে।
সে চোখের দৃষ্টি বড্ড প্রখর।
দ্রুত নিচে নেমে জানালা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।বাহিরে বের
হওয়ার পর পরই ঠান্ডা বাতাসে শরীরে অন্যরকম একটা প্রশান্তি
অনুভব হলো। মনে হচ্ছে এতক্ষণ পৃথিবী থেকে অনেক
দূরে একটা ভিন্নস্থানে চলে অবস্থান করছিলাম,যেখানে প্রাণ
খুলে শ্বাস নেওয়াটাই বড্ড কষ্টের। একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বাগান
পেরিয়ে প্রাচীরের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। এ বাড়িতে
কিছু তো একটা গন্ডগোল আছে।
তবে কি সেটা? আর সেটাই আমাকে খুঁজে বার করতে হবে।
প্রাচীরের কাছে এসে একটাবার দোতলার বেলকনির দিকে
তাকালাম,রোদের আলোতে বেলকনিটা চকচক করছে।
কেন যানি মনে হচ্ছে বাচ্চা মেয়েটা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে
আছে,আর ক্ষীণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
দেরি না করে প্রাচীর টপকিয়ে বাহিরে এসে সোজা বাড়ির
দিকে রওনা দিলাম।
বাড়ি এসেই টেবিলের উপর থাকা পানির জগটা উপরে ধরে ঢকাঢক
এক নিঃস্বাসে অর্ধেক শেষ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে
ধপাস করে সোফাতে বসে পড়লাম।
এতক্ষণে যেন শরীরে প্রাণের সঞ্চারণ হলো।
নীলা এসে কাঁধে হাত রাখতেই চমকে উঠে
বললাম,”কে,কে?”
নীলা সামনে এসে চোখ উল্টিয়ে বললো,”ভূত। না ভূত
নয়,শাকচুন্নি।”
আমি নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বললাম,”ওহ তুমি। “
“কেন অন্যকাউকে আশা করেছিলে নাকি?”
“হুম,হলে মন্দ হতো না।”
“কিহ্। কি বললা তুমি?”
“আরে বাদ দাও,
অন্যকাউকে আসা করবো কেন,আর যে মেয়ে সামান্য
কোলবালিশকে তাঁর স্বামীর ভাগ দিতে চায় না,সে একটা
মেয়েকে।
যায় হোক আবরার কোথায়?ওকে দেখছি না যে?”
“রুমে খেলছে। তুমি সকাল সকাল কোথায় বেরিয়েছিলে,গাড়ি
টাও তো রেখে গেছিলে?”
“একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম।”
“সকাল নয়টার পর?”
“আরে না,কাছেই একটু দরকার ছিলো সেইজন্য। চলো
খেতে দিবা খুব জোর ক্ষুধা লেগেছে।”
“হুম আসো।”
কথাটা বলেই নীলা রান্নাঘরে চলে গেলো।
আমি সোফাতে বসে বসে একমনে ঐ বাড়িতে ঘটে যাওয়া
ঘটনাগুলো আওড়াচ্ছি।
‘এ কিভাবে সম্ভব, একটা মেয়ে আজ দশ বারো বছর পরও একই
রকম কিভাবে থাকতে পারে? আর গতকাল যদি আমি ভুল দেখেও
থাকি তাহলে ঐ মেয়েটাকেই কেন দেখলাম! বাকিদের
চোখে তাহলে কেন পড়লো না?
তাহলে কি মেয়েটার বয়সটা ঐ পাঁচ-ছয় বছরেই আটকে
রয়েছে? আবার গতরাতে দিব্যি সবকিছু মনে হলো নিজের
চোখের সামনেই ঘটে গেলো,অথচ সকালে উঠে নীলার
মুখে যা শুনলাম,তাঁর সাথে সেই সবের কোনোকিছুই ঘটেনি।
তাহলে কি আমি ইদানিং একটু বেশিই কল্পনাপ্রবণ হয়ে যাচ্ছি?
মাথাতে ঢুকছে না। এসব কি হচ্ছে আমার সাথে?
“খেতে আসো।”
নীলার কথাতে সম্মতি ফিরলো আমার।সোফা থেকে উঠে
চোখ-মুখে পানি ছিটিয়ে খেতে খেতে বসলাম।
খাবার খাওয়ার এক পর্যায়ে রান্না ঘরের এক পাশে হঠাৎ করে
দেখলাম ঐ বাড়ির ফ্রেমে দেখা সেই মহিলাটি দেওয়ালের
সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বড় অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার
দিকে তাকিয়ে আছে সে। যেন কিছু একটা বলতে চায়ছে
আমাকে। আমি চিৎকার দিয়ে উঠে বললাম,”কে তুমি? তুমি ঐ বাড়ির
মহিলাটা না! এইখানে কি করছো?”
নীলা আমার চেচামেচি শুনে সেদিকে তাকালো,তারপর
বললো,”কোন মহিলা,আরে ওটা তো আমাদের সারদা মাসি।
গতকাল রাতেই চলে এসেছে গ্রাম থেকে।”
আমি নিজেকে শান্ত আবারো তাকালাম সেদিকে।
হ্যা নীলা তো ঠিকি বলছে,সারদা মাসি দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ এমন
প্রশ্ন করাতে সে বেশ ইতস্তত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বললাম,”তুমি যে বললা,মাসির আসতে আরো কয়দিন সময় লাগবে?”
নীলা বললো,”হ্যা বলেছিলাম,তখন মাসি বলেছিলো দেখেই
তো বলেছিলাম। আজকে দেখি সকালে চলে এসেছে।
জিজ্ঞাসা করাতে বললো,তাঁর ছেলে নাকি এখন অনেকটাই সুস্থ্য
তাই চলে এসেছে।”
“কিন্তু আমি সকালে যখন রান্নাঘরে গেলাম তখন তো মাসিকে
দেখলাম না,তাই হঠাৎ দেখে ভেবেছি অন্যকেউ।”
“তখনো ছিলো,মাসিকে একটু বাজারে পাঠিয়েছিলাম,সবজি কেনার
জন্য।”
“ওহ্ আচ্ছ ঠিক আছে।”
আর কিছু না বলে চুপচাপ খেতে লাগলাম।
খাবার শেষে টেবিল ছেড়ে উঠার সময় আরো একবার মাসির
দিকে তাকাতেই দেখলাম,মাসি বড় অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার দিকে
তাকিয়ে আছে অপলকভাবে।
তাঁর দিকে চোখ পড়তেই মুখ বাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি
খেলে গেলো তার ঠোঁটে।
এসবকিছুই ভ্রম,নিজেকে কোনরকমে বুঝিয়ে টেবিল ছেড়ে
উঠে গিয়ে বেলকনিতে দাঁড়ালাম।
বাহিরে রোদ ঝলমল করছে।
আবরার তাঁর নতুন বন্ধুদের নিয়ে বল খেলছে। প্রাণ খুলে
হাসছে ছেলেটা।
ছেলের হাসি দেখে আমার মুখেও সামান্য হাসি খেলে
গেলো।
চারপাশ দেখতে দেখতে আবার চোখ পড়লো রাস্তার ওপাশে
থাকা বাড়িটার বেলকনির দিকে।
রোদ পড়ে চকচক করছে বেলকনিটা। নিজের অজান্তেই
বলে উঠলাম,”আসলেই কি ভূত বলে কিছু আছে? আমার সাথে
গত কয়েকদিনে যা হয়ে এসেছে সেসবের কোনো
বৈজ্ঞানিক ব্যাখা আমার জানা নেই।
কাউকে এসব বললে,সে নিশ্চয় আমাকে পাগল বলে আখ্যায়িত
করবে নয়তো বলবে সবকিছুই আমার কল্পনা।
কারণ কিছুদিন আগে আমি নিজেও এইসবে কখনো বিশ্বাস করিনি।
মানুষ কি মারা যাওয়ার পর আর ফিরে আসতে পারে?
কখনোই ফিরে আসেনা। তাহলে আমার সাথে যেগুলো
হচ্ছে তার ব্যাখা কে দিবে?
“তুমি এখানে? আর আমি সারাবাড়ি খুঁজছি।”
নীলার কথাতে পিছন ফিরে তাকিয়ে বললাম,”কেন কিছু বলবা?”
“নাহ্ তেমন কিছু না। আচ্ছা আমাকে সত্যি করে বলো তো,তুমি
কি আমার কাছ থেকে কোনো কিছু লুকাচ্ছো?”
“তোমার কেন এমনটা মনে হলো?”
“নাহ্,এমনিতেই। কয়দিন ধরে তোমার ব্যবহারের বেশ পরিবর্তন
দেখছি তো তাই। কোনো কিছু নিয়ে সমস্যা হলে আমার সাথে
সেয়ার করতে পারো। সেদিন বললে, আবরারের সাথে কাকে
না কি দেখেছো,আবার বললা আমি নাকি এ বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার
কথা বলেছি তোমাকে,একটু আগে আবার মাসিকে দেখে
চিৎকার দিয়ে উঠলে। তুমি কি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত।অফিসে
কোনো ঝামেলা হয়েছে কী?”
আমার কাছে বলতে পারো,আর তুমি তখন মাসিকে অন্য একজন
মহিলা বলছিলে,কোন মহিলার কথা বলছিলে?
আমি হেসে বললাম,”আরে নাহ্। তেমন কিছু না। গুরুতর কিছু হলে
তো সবার আগে তোমাকেই বলতাম। ওসব বাদ দাও।”
নীলা খানিকটা হতাশ মনে বললো,”কি জানি। আচ্ছা বাদ দিলাম।
আচ্ছা চলো না আজকে কোথাও থেকে একটু ঘুরে আসি।
তোমার তো আজকে অফিস ছুটি। শুনেছি এইখানে পাশেই
একটা সুন্দর লেক আছে। চলো না সেখান থেকে একটু ঘুরে
আসি। তাহলে দেখবা মনটা অনেকটা হাল্কা হয়ে গিয়েছে।”
আমিও আর না করলাম না,আসলেই এসবের থেকে কিছুটা দূরে
থাকার জন্য হলেও একটু ঘুরাঘুরির প্রয়োজন আছে। না হলে
আজগুবি চিন্তাভাবনা আরো বেশি করে পাকড়ে ধরবে আমাকে।
বললাম,”আচ্ছা ঠিক আছে,তাহলে বিকেলে রেডি হয়ে
থেকো।”
নীলা হেসে জবাব দিলো,”আচ্ছা ঠিক আছে। এখানে দাঁড়িয়ে
কি করছো চলো রুমে চলো।সপ্তাহে তো একটা দিন বাসায়
থাকো আমাকে একটু সময় দিবা তা না,সকাল থেকে পালিয়ে
পালিয়ে বেড়াচ্ছেন উনি।”
কথাটা বলেই হেচকা টানে বেলকনি থেকে সরিয়ে নিলো
আমাকে।
বিকেলে আমরা তিনজন মিলে লেকে ঘুরতে গেলাম। আবরার
তো মহাখুশি। সারাবিকেল খুনসুটিতে কেটে গেলো
আমাদের। রাতে বাহিরে ডিনার করে একবারে বাসায় ফিরলাম।
তিনজনেই বড্ড ক্লান্ত,আবরার তো গাড়ির ভিতরেই ঘুমিয়ে
পড়েছে। বাসায় এসে আবরারকে কোলে নিয়ে রুমে এসে
শুইয়ে দিলাম।
নীলা বললো,”তুমি আর কিছু খাবে? মাসি খাবার গুলো ফ্রিজে
ঠিকঠাক মত রেখেছে কিনা দেখে আসি।”
আমি মোড়ামুড়ি করতে করতে বললাম,”না,আমি আর কিছু খাবো না।
বড্ড ক্লান্ত লাগছে,আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
তুমিও তাড়াতাড়ি এসে রুমের লাইট টা অফ করে দিয়ে শুয়ে
পড়ো।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
ঘুমের ভিতরে হঠাৎ একটা শব্দ শুনে জেগে উঠলাম।
তাকিয়ে দেখি নীলা ড্রইং রুমে হাঁটাহাটি করছে। বিছানা ছেড়ে
উঠে বসলাম।
‘এতো রাতে নীলা না ঘুমিয়ে হাঁটাহাটি করছে কেন?
কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পর দেখলাম, সদর
দরজা খুলে বাহিরে দিকে সঠান হেঁটে চলে যাচ্ছে নীলা।
জানবার ইচ্ছে আমাকে ভাবিয়ে তুললো,
আমি খাট থেকে নেমে বেশ কয়েকবার নীলাকে ডাক
দিলাম,কিন্তু কেন যানি মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বার হলো না
আমার।
‘এতো রাতে নীলা বাহিরে কোথায় যাচ্ছে?
খাট থেকে নেমে নীলাকে উদ্দ্যেশ্য করে তাঁর পিছু নিয়ে
হাঁটা শুরু করে দিলাম।
নীলা সোজা বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তার ওপাশে থাকা বাড়িটার
কাছে গিয়ে গেইটের সামনে থমকে দাঁড়ালো।
আমি আরো কয়েকবার তাকে ডাকার চেষ্টা করলাম, কিন্তু মুখ
দিয়ে কোনো শব্দ বার হলো না।
বেশ খানিকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়লাম, দেখলাম দিনের
আলোতে তালা বন্ধ হয়ে থাকা গেইট টা আপনা-আপনি খুলে দু
পাশে ভাগ হয়ে গেলো।
নীলা সন্তপর্ণে ভিতরে ঢুকে গেলো।
আমিও তাঁর পিছু নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম।
নীলা ধির গতিতে বাড়ির সদর দরজার দিকে এগিয়ে যেতেই
দেখলাম সেটাও নিজ থেকে খুলে গেলো। নীলা যেন
এখন নীলার ভিতরে আর নেই। তার সাথে হাজারো অদৃশ্য শক্তি
তাকে ঘিরে ধরে আছে। কিন্তু নীলা ভিতরে ঢুকছে কেন?
আর ও এই বাড়িতে এমনভাবে ঢুকছে যেন তাঁর নিত্যদিন যাতায়াত এই
বাড়িটাতে।
কিন্তু বাড়িটা তো সুবিধার নয়, বাড়িটা তো অভিশপ্ত।
নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
ছুটে গিয়ে পিছন থেকে নীলার হাতটা ধরতেই অনুভব
করলাম,নীলার হাতটা বরফের মত ঠান্ডা হয়ে আছে।
হাতটা ধরতেই নীলা ঘুরে তাকালো, মূহুর্তেই শরীরে বিদ্যুৎ
খেলে গেলো, শক খাওয়ার মত ঝাটকা লাগলো আমার।
গতরাতে নীলার বলা ভয়ংকর সেই বিবরণের সাথে এখন এই
মেয়েটার হুবুহু মিলে যাচ্ছে। পুরো শরীর ফ্যাকাশে,যেন
কেউ শরীরের সমস্ত রক্ত শুষে নিয়ে শুধু শরীরটাকে
ছেড়ে দিয়েছে। চোখের ভিতরের মনি দুটো কেউ যেন
খুবলে নিয়ে কালোর পরিবর্তে সাদা চুন লাগিয়ে দিয়েছে।
এটাতো নীলা না!! তাহলে নীলা কোথায়?
এবার মুখ দিয়ে কথা বেরিয়ে এলো আমার,কাপাকাপা কণ্ঠে
বললাম,”কে কে তুমি?”
মেয়েটা হা হা করে হাসতে লাগলো। সে হাসির শব্দ যেন
কানের পর্দা ভেদ করে সোজা হৃৎপিন্ডতে গিয়ে আঘাত
করছে আমার।
আমি স্বজোরে হাতটা টান মেরে ছাড়িয়ে নিতে চায়লে মনে
হলো হাতটা আমার হলেও সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে
অন্যকেউ।
সাতপাঁচ কোনোকিছু ভাবার আগেই মেয়েটা আমাকে টেনে
নিয়ে যেতে লাগলো ভিতরের দিকে। আমি যতবারই টান দিয়ে
হাতটাকে ছাড়িয়ে নিতে চায়ছি ততোই যেন হাতটা আরো বেশি
করে আটকে যাচ্ছে তাঁর হাতের সাথে।
জোরে চিৎকার দিতে গিয়েও কেন যানি মুখ দিয়ে কোনো
শব্দ বার হচ্ছে না আমার।
কেউ যেন আমার বাকশক্তি ছিনিয়ে নিয়েছে।
প্রাণপণে মেয়েটার থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য ছটফট
করতে থাকা আমাকে টানতে টানতে ভিতরে নিয়ে গিয়ে সিড়ি
বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো মেয়েটা।
আমার হাত-পা, পুরো শরীরের পেশীগুলো যেন কাজ করা
বন্ধ করে দিচ্ছে ধিরে ধিরে।
মেয়েটা ঠিক সেই রুমটাতেই আমাকে নিয়ে গেলো যেই
রুমটাতে দিনের বেলাতে আমি এসেছিলাম।
রুমে আসার পর দিনের বেলাতে দেখা সেই ওয়ারড্রবের
কাছে এনে হাতটা ছেড়ে দিলো আমার।
আমি হাত মুক্ত দেখে উঠে পালানোর চেষ্টা করলেও
পালাতে ব্যর্থ হলাম।
মেয়েটা এবার দু হাত দিয়ে স্বজোরে হাতল ধরে ওয়ারড্রবের
পাল্লা দুটো টান দিতেই পঁচা গন্ধে নাক বন্ধ হয়ে আসলো
আমার।
ওয়ারড্রবের ভিতরে দুজন মানুষের লাশ পড়ে আছে।লাশ দুটো
পঁচে গলে একটা আরেকটা সাথে লেপ্টে গিয়েছে।
হাজারো মাংসাশী পোকা যেন লাশ দুটোর পুরো শরীরে
ছড়িয়ে থেকে মাংসগুলো পরম তৃপ্তির সহিত খাচ্ছে।
এমন বিভৎসতা দেখে যেন আমার চোখ দুটি খুবলে গিয়ে
খসে পড়ে যেতে চায়ছে এখনি।কি হচ্ছে এসব? বিভৎসতা যে
আর কোনভাবেই চোখদুটি সহ্য করতে পারছে না আমার।
আমাকে দেখে লাশের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাংসাশী
পোকাগুলো এবার আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো পঁচা
লাশদুটোকে ছেড়ে।
আমি প্রাণপণে চিৎকার দিতে গিয়েও কেন যানি মুখ দিয়ে
কোনো শব্দ বের হচ্ছে না।
তাহলে কি আমারো একই অবস্থা হবে? এই লাশদুটোর মত
করে কি আমার পুরো শরীরটাকেও এই মাংসাশী পোকা গুলো
পরম তৃপ্তির সহিত খুবলে খুবলে খেয়ে শরীর থেকে
মাংসগুলো আলাদা করে দিবে?
ভাবতেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে,একটা পোকা এসে হাতে কামড়
দিতেই চিৎকার দিয়ে উঠলাম। কেউ যেন শতশত সুই হাতের
ভিতরে একত্রে ঢুকিয়ে দিয়েছে।
ব্যাথাতে কাতরাচ্ছি আমি।তবুও যেন কেউ আমার আর্তনাদ শুনতে
পাচ্ছে না।
বিশাল এই পৃথিবীর বুকে যেন নিজেকে এইমূহুর্তে খুব তুচ্ছ
মনে হচ্ছে,
নিজেকে এদের থেকে বাঁচাতে না পেরে।
শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে এবার শেষবারের মত আর্তনাদ
করে উঠলাম নিজেকে বাঁচানোর জন্য।

“এই কি হয়ছে ওমন করছো কেন? এই আশিক,আশিক। কি হয়ছে
তোমার?”
নীলার ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভাঙ্গলো। চোখ মেলে তাকিয়ে
যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। তারমানে এতক্ষণ দুঃস্বপ্ন দেখছিলাম।
দুঃস্বপ্ন এতোটা বিভৎস আর ভয়ংকর হয় জানা ছিলো না।
“কি হয়ছে,ওমনভাবে গোঙ্গানি দিচ্ছিলে কেন? কোনো খারাপ
স্বপ্ন দেখেছো কী?”
আমি খানিক্ষন চুপ থেকে পাশের থাকা বোতলটা হাতে নিয়ে পানি
পান করার পর বললাম,”হুম,খুব ভয়ানক একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু
কি দেখেছি সেটা মনে নেই। শুধু মনে আছে তুমি আমাকে
টেনে হিচড়ে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছিলে।”
নীলা চোখ দুটি গোলগোল করে বললো,”আমি! আমি
তোমাকে টানছিলাম। যাক স্বপ্নের ভিতরেও তো তোমাকে
টানার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।”
“তুমি চায়লে বাস্তবেও ঠ্যাং ধরে টানতে পারো,কি টানবা নাকি?”
“আরে ধুর কি বলো, এ শেষরাতে এখন আমার কাজ নেই
তোমাকে ধরে টানাটানি করতে যাবো আমি। ঘুমাও তো,একটু
পরেই আবার ভোর হয়ে যাবে।”
নীলা আমার কাছ থেকে উঠে গিয়ে ওপাশে আবার শুয়ে
পড়লো।আমি চুপচাপ ঘুমানোর ভান ধরে পড়ে থাকলাম বিছানার
উপরে।
‘হঠাৎ এমন স্বপ্ন দেখার কারণ কী? ওরা দু’জনে চায়ছে টা কি
আমার কাছে? ঐ বাড়ির মালিক সম্পর্কে আমাকে জানতে হবে।
নিশ্চয় এমন কোনো দূর্ঘটনা লুকিয়ে আছে লোকচক্ষুর
আড়ালে যা কেউ জানে না।
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ভোরের আযান পড়লো। বিছানা ছেড়ে
উঠে ফজরের নামাজ পড়ে আর ঘুম আসলো না। মাথার ভিতরে
দুঃস্বপ্নটা চক্রাকারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সকালে অফিসে যাওয়ার পথে আবরারকে তার স্কুলে নামিয়ে
দিয়ে আমি পিছনে মোড় নিলাম। সামনের মোড়ে আমাদের
বাড়ির মালিকের বাসা,ওর সাথে কথা বলে যদি কোনো কিছু জানা
যায়,সেই উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলাম।
বাড়ির সামনে যেতেই দেখলাম,বাড়ির মালিক বারান্দাতে বসে বসে
খবরের কাগজ পড়ছে আর চা খাচ্ছে।
আমাকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে পত্রিকা থেকে মুখে
তুলে তাকালেন ভদ্রলোক।
তারপর বললেন,”আরে আশিক সকাল সকাল কি মনে করে?
আসো আসো।
তারপর একজন মহিলার নাম ধরে ডেকে বললেন,চা দিতে।
আমি ভদ্রলোককে চা দিতে বারণ করে একটা চেয়ার টেনে
নিয়ে বসলাম।
ভদ্রলোক হেসে বললেন,”তারপর নতুন বাড়িতে কেমন
লাগছে,বাড়িওয়ালা হিসেবে তো আর তোমাদের কোনো
খোঁজই নিতে পারলাম না। একা মানুষ তারউপরে আবার হাঁটুর ব্যাথাটা
বেড়েছে নয়তো সময় করে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে
আসতাম তোমাদের।”
আমিও হেসে জবাব দিলাম,”না তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এতো কম টাকা দিয়ে এতবড় একটা বাড়ি পেয়েছি,আর তাছাড়াও
আমার স্ত্রী আর ছেলেরও বাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে।”
বাড়িওয়ালা কথাটা শুনে বেশ প্রফুল্ল মনে বললেন,”তা বেশ
বেশ। তা বাবা কোনো দরকার ছিলো নাকি?”
আমি ইতস্ততভাবে বললাম, “হ্যা চাচা। আপনার কাছে কিছু জানার
ছিলো।”
“হ্যা বলো,কি জানতে চাও?”
“আসলে আমাদের অপজিটে যে ডুপ্লেক্স বাড়িটা আছে।
সেই বাড়িটার সম্পর্কেই কিছু জানার ছিলো?”
কথাটা শোনার পর দেখলাম বাড়িওয়ালার কপালে খানিকটা ভাজ পড়ে
গিয়েছে।
বাড়িওয়ালা অনিচ্ছুক হয়ে বললেন,”তুমি কি ঐ পরিত্যক্ত বাড়িটার কথা
বলছো?”
“হ্যা।”
“কি জানতে চাও বলো?”
“না তেমন কিছু না,আসলে এখানে আসার পর থেকে
লোকমুখে নানান কথা শুনতে পাচ্ছি তো তাই।”
“কি কথা,ঐ বাড়িতে ভূত থাকে,বাড়িটা অভিশপ্ত এইসব তাই তো?”
“হ্যা। আপনি ঠিকি ধরেছেন। সেদিন আমার গাড়ির ড্রাইভারও একই কথা
বলছিলো।”
“তা তোমার কি মনে হচ্ছে,তুমি তো বাড়িটার একদম কাছেই
থাকো। রাস্তার এপার-ওপার। তোমার চোখে কি ওসব কিছু
পড়েছে?”
“নাহ্ তেমন কিছু পড়েনি। আচ্ছা ঐ বাড়িটাতে কারা থাকতো,আর এখন
থাকেনা কেন?”
বাড়িওয়ালা এবার পত্রিকার কাগজটা একপাশে সরিয়ে রেখে
বললো,” ঐ বাড়ির মালিক আসলে এখানকার না। লন্ডনে থাকতো
তাঁরা সহপরিবারে। নাম জাফর চৌধুরী।
মাঝেমধ্যে কাজের ব্যস্ততা কাটাতেই ঐ বিলাসবহুল বাড়িটা
বানিয়েছিলো বাড়ির মালিক।
দেশে আসলে যে কয়টাদিন থাকতো ঐ বাড়িতেই থাকতো।
তারপর আবার চলে যেতো,তবে ঐ বাড়ির দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছিলো ঐ বাড়ির কেয়ারটেকার সুমনকে।বেশ বিশ্বস্ত
লোক ছিলো। তবে বিশ্বস্থ থাকলে কি, কথায় আছেনা সবকিছুর
নষ্টের মূলে নারী। ওদের ক্ষেত্রেও ঠিক একই জিনিস
ঘটেছিলো।
কেয়ারটেকারের নাম ছিলো সুমন,দেখতে বেশ সুঠাম আর
শ্যামবর্ণের হলেও চেহারাতে একধরনের মায়া ছিলো।
হয়তো সেই মায়াতে আচ্ছন্য হয়ে পড়েছিলো বাড়ির
মালকীন।আর এভাবে আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে নাকি বাড়ির
মালকীনের সাথে সুমনের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো
বলে শোনা যায়।
“তারপর?”
“তারপর আর কি ঐ বাড়ির মালকীন তাঁদের পাঁচ বছরের মেয়েকে
নিয়ে নাকি সুমনের হাত ধরে পালিয়ে যায়।”
“বাড়ির মালিক তাঁদের খোঁজার চেষ্টা করেনি?”
“তা আবার করেনি,করেছিলো। এখানকার স্থানীয় থানাতে
বলেছিলো,পুলশি কিছুদিন খোঁজার পর বিষয়টা ধিরে ধিরে চাপা
পড়ে গিয়েছিলো।তারপর ভদ্রলোক একাই আবার লন্ডনে
ফিরে গিয়েছিলো। আর কখনো এবাড়িতে আসেন নি। তারপর
থেকেই এই বাড়িটা পরিত্যক্ত হিসাবেই পরিচিত সবার কাছে। এলাকার
মানুষে নানান ধরনের কথা তুলেছে বাড়িটাকে নিয়ে।
তবে আমি কখনো ওসব বুঝতে পারিনি,এমনকি কখনো
দৃষ্টিগোচরও হয়নি আমার।
বুঝতেই তো পারছো,সাধারণ মানুষ তিলকে তাল বানাতে এদের
কোনো জুড়ি নেই।”
বাড়িওয়ালার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। বাড়িওয়ালার কথামত যদি
ঐ বাড়ির মালকীন কেয়ারটেকারের সাথে অন্যত্র চলে
যায়,তাহলে আমাদের সাথে যেগুলো হচ্ছে তার ব্যাখা কে
দিবে? আদৈও কি ঐ বাড়ির মালকীন চলে গিয়েছিলো, নাকি ঘটনার
আঁড়ালেও অন্য কোনো ঘটনা লুকিয়ে আছে,যা সবার অজানা?
অফিসের ডেস্কে বসে আছি এমন সময় একজন ভারী
কণ্ঠজড়িত লোক এসে বললো,”স্যার ভালা আছেন?”
একটা জরুরি ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করছিলাম,তাই সেদিকে না তাকিয়েই
বললাম,”এখন চা খাবো না। পরে ইচ্ছে করলে ডেকে নিবো।”
সামনে থাকা লোকটা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ডেস্কের উপর
একটা সাদা কাগজ রেখে চলে গেলো।
আমি ফাইল থেকে চোখ সরিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই
দেখলাম,আমাদের অফিসের চা বয় করিম চাচা দূরে দাঁড়িয়ে
আছে।
কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলাম তাতে একটা ফোন নাম্বার লিখা
রয়েছে।
চা বয় চাচাকে ডাক দিলাম।
“করিম চাচা একটু এদিকে আসো তো।”
করিম চাচা সন্তপর্ণে ছুটে এসে বললো,”হ স্যার কিছু কইবেন,চা
লাগবো নি?”
আমি হেসে বললাম,”না চাচা,এইটা কিসের কাগজ দিয়ে গেলে
আমাকে? কার ফোন নাম্বার এইটা?”
করিম চাচা খানিকটা অবাক হয়ে বললো,”স্যার আমি তো আপনারে
কিছু দেয় নাই।”
“একটু আগেই না আমার ডেস্কের সামনে এসে কাগজটা দিয়ে
গেলে আমাকে?”
“নাতো স্যার,আমি তো আমার জায়গাতেই দাঁড়াইয়া ছিলাম। আপনি
ডাকনের পর আইছি।”
“তুমি ছাড়া কি আর কোনো লোক এসেছিলো,বয়স্ক টাইপের?
বা আমার ডেস্কের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছো
কাউকে একটু আগে?”
“কোই নাতো,কাউরে তো দেখি নাই।”
দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে সেও জানালো,সে ওমন
কোনো লোককে ভিতরে আসতে দেখেনি।
কাগজটা হাতে নিয়ে চেয়ারে ধপাস করে বসে পড়লাম।
একটু আগে তাহলে যে বয়স্ক লোকটা আমার ডেস্কের
সামনে এসেছিলো সে কে ছিলো?
আর কেউ যদি না আসে,তাহলে কাগজটা কে দিয়ে গেলো?”
কোনোকিছু না ভেবেই কাগজে থাকা নাম্বারটা মোবাইলে টাইপ
করে কল দিলাম। ল্যান্ড ফোনের নাম্বার।নাম্বারে রিং হচ্ছে। রিং
শেষ হওয়ার মূহুর্তে একজন ভারী কণ্ঠে বলে
উঠলো,”হ্যালো জাফর বলছি?”
আমি ফোনটা কানে নিয়ে কিছুক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে বসে
রয়লাম,ওপাশ থেকে একনাগাড়ে ভদ্রলোক হ্যালো হ্যালো
করেই চলেছে।
এই জাফর কি সকালে বাড়িওয়ালার বলা ঐ জাফর?
আমি বললাম,”হ্যালো। আমি কলাতলীর সাত নাম্বার রোডের
বারো নাম্বার বাসার ভাড়াটিয়া বলছিলাম।”
ফোনের ওপাশটা কিছুক্ষণ নিরব থাকার পর
বললো,”কলাতলী,কোন কলাতলী?”
“কুসুমপুর কলাতলী,আপনি তো জাফর চৌধুরী তাই না?”
লোকটা এবারো কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর বললো,”ওহ
আচ্ছা,তা কে বলছেন আর কেন ফোন দিয়েছেন,নাম্বার
কোথায় পেয়েছেন আমার?”
“আসলে সেসব বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
আসলে আপনার কাছে যে জন্য ফোন দিয়েছি, আপনার
ফেলে রাখা ডুপ্লেক্স বাড়িটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।
আর আমি একজন কর্পোরেট অফিসার,আপনার বাড়ির সামনের বাড়ির
ভাড়াটিয়া।
আসলে আপনার বাড়িটা যেহেতু খালি পড়ে আছে,আমি চায়ছিলাম
আপনার বাড়িটা ভাড়া নিতে।”
লোকটা এবার বেশ ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললো,”আপনি কি আমাকে
টাকার লোভ দেখাচ্ছেন,ঐ সামান্য কিছু ভাড়ার টাকা দিয়ে তো
আমার একদিনও চলবে না।”
আমি নিজেকে শান্ত রেখে বললাম,”তা জানি,তবে আপনার বাড়িটা
তো শুধু শুধু পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
এতো বিলাসবহুল বাড়িটা পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হচ্ছে দেখেই
আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম,আপনি যখন রাজি না তাহলে আর কি
করার।”
কথাটা বলে ফোন রেখে দিচ্ছিলাম,তখনি ওপাশ থেকে ভেসে
আসলো,”আপনার যখন বাড়িটা এতোই মনে ধরেছে,তাহলে
আপনি চায়লে বাড়িটা একবারে কিনে নিতে পারেন,পারবেন?”
ভদ্রলোককে সামনা-সামনি যেহেতু দেখার ইচ্ছে ছিলো,তাই
বললাম,”হ্যা পারবো। তারজন্য তো আপনাকে এখানে আসতে
হবে।”
“আচ্ছা ঠিক আছে,আর তাছাড়া আমি এমনিতেও যেতাম। বাড়িটা বিক্রির
জন্য,কয়েকজন বিল্ডারের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলে
রেখেছি। আপনার যেহেতু বাড়িটা এতোই পছন্দ
হয়েছে,তাহলে আপনার সাথে একটাবার বসা যেতেই পারে।
আমি কয়েকদিনের ভিতরে বাংলাদেশে যাচ্ছি। তখন কথা হবে।”
বলেই লোকটা লাইনটা কেটে দিলো।
আমি ফোনটা হাতে নিয়ে হতভম্ব হয়ে বসে ভাবতে লাগলাম,এই
লোকটাকে যে আমি মনে খুঁজছি মনে খুঁজছি তা অন্যকেউ
জানলো কিভাবে?
আমি তো কাউকে বলিও নি,আর যেই লোকটা আমাকে কাগজটা
দিয়ে গেলো সেই বা কে ছিলো? ভদ্রলোক আসলেই
সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।
..

অন্তিম পর্ব)
দিনকে দিন কি আমি আরো বেশি করে অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছি? কি
হচ্ছে এসব আমার সাথে। যা আমি দেখি তা আর কেউ দেখতে
পাচ্ছে না কেন?
এসব ভাবতে ভাবতে আমার সামনের দেওয়ালে থাকা সি সি
ক্যামেরার দিকে চোখ পড়লো।
ক্যামেরাটা ঠিক আমার ডেস্কের অপরপ্রান্তে বসানো
রয়েছে। সুতরাং আমার ডেস্কের সামনে যে কেউই আসুক না
কেন সে ঐ ক্যামেরাতে ধরা পড়বে।
ছুটে গেলাম কন্ট্রোল রুমে,গিয়ে কন্ট্রোলারকে আমার
ডেস্কের সামনে থাকা সি সি ফুটেজটা দেখাতে বললাম।
দেখলাম মনিটরে একজন আপাদমস্তক কালো চাদরে
মোড়ানো লিকলিকে চেহারার আগুন্তকঃ ধির গতিতে আমার
ডেস্কের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তারপর আমাকে কিছু একটা
বলছে,হয়তো ‘ভালা আছেন স্যার’ এই কথাটায় বলছিলো। আমি
আমার ফাইলটার দিকে মাথা নিচু করে ব্যস্ত হয়ে আছি।
লোকটা এবার চাদরের ভিতর থেকে ডান হাতটা বার করে একটা
কাগজ রেখে দ্রুত গতিতে আবার চলে গেলো।
ফুটেজটা ফ্রিজ করার পরও লোকটার মুখটা ঠিকমত ঠাওরে উঠতে
পারলাম না।
কারণ পুরো মুখটা চাদর দিয়ে মোড়ানো।
তাহলে চা বয় করিম চাচা আর দারোয়ান যে বললো তারা কাউকে
আমার ডেস্কের সামনে আসতে দেখেনি,তাহলে এই
লোকটাকে ক্যামেরা কিভাবে ধারন করলো?
অফিসের অন্য স্টাফদের বললে হয়তো বিষয়টা আরো জটিল
হতে পারে,সেই ভয়ে ঘটনাটা চেপে গেলাম।
আজ পাঁচ-ছয়দিন পর খুব সকালে একটা অচেনা নাম্বার থেকে
সকালে ফোন আসলো,রিসিভ করতেই একজন পুরুষালী
কণ্ঠে বললো,”আমি বাংলাদেশে এসেছি।
কয়েকঘন্টার ভিতরে কুসুমপুর পৌঁছে যাবো।আপনি ফ্রি আছেন
তো?”
কথাগুলো শুনে বুঝতে বাকি রয়লো না,সামনের বাড়িটার মালিক,
জাফর চৌধুরী আসছেন তাহলে।
আমি একগাল হেসে জবাব দিলাম,”হ্যা একদম ফ্রি আছি। আপনি
সোজা এসে আমার বাসায় উঠবেন,একসাথে দুপুরের খাবার
খাবো।”
ওপাশ থেকে ভদ্রলোক হেসে লাইনটা কেটে দিলো।
আমি দ্রুত অফিসে ফোন দিয়ে পেট খারাপের কথা বলে ছুটি
নিয়ে নিলাম।
এদিকে নীলাকেও বললাম,দুঃসম্পর্কের এক কাজিন আসছে বাহির
থেকে, আমাদের বাসাতেই উঠবে সে।তাঁর জন্য যেন খাবার
রেডি করে রাখে।দুপুরে একসাথে খাবো।
নীলা আর মাসি রান্না করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো,আর আমি
আবরারকে স্কুলে রেখে এসে অপেক্ষা করতে
লাগলাম,ভদ্রলোকের আশার পথ চেয়ে।
দুপুরের দিকে রাস্তার ওপাশে থাকা বাড়ির সামনে একটা গাড়ি এসে
থামলো,বাসা থেকে বার হয়ে সেদিকে গেলাম।
গাড়ির ভিতর থেকে একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোক নেমে
দাঁড়ালো। বাড়িটার দিকে তাঁর তাকানোর ভঙ্গিমা আর পোষাক
দেখে খুব একটা বেগ পেতে হলো না ভদ্রলোককে
চিনতে। ইনিই তাহলে এই বাড়ির মালিক,জাফর চৌধুরী। নামের সাথে
চেহারা আর পোষাক-পরিচ্ছেদের বেশ মিল আছে।
পরনে ছাঁয় রংয়ের একটা কোর্ট পরা ,চোখে হাল্কা ফ্রেমের
চশমা, মাথায় কাঁচাপাকা চুল সেই সাথে বাদামী রংয়ের সুঠাম দেহটাতে
একটা চৌধুরী চৌধুরী ভাব আছে।
আমাকে আসতে দেখেই ভদ্রলোক বলে উঠলো,”
আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম জাফর চৌধুরী। “
বলেই হ্যান্ডশেকের জন্য হাতটা বাড়িয়ে দিলেন।
আমিও হাসি মুখে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,”আমি আশিক, আমার
সাথেই আপনার কথা হয়েছিলো।”
“ওহ্ আচ্ছা, আপনিই সেই ভদ্রলোক।”
“হ্যা, আমার বাড়ি রাস্তার ওপাশে,ঐযে ,ওখানে ফ্রেশ হয়ে
দুপুরের খাবার খেয়ে তারপর না হয় এ বাড়িতে আবার আসা যাবে।
ভদ্রলোক গাড়িটা ছেড়ে দিয়ে আমার সাথে হাঁটতে লাগলো।
লোকটা তাঁর সাথে করে শুধু একটা হ্যান্ডব্যাগ ছাড়া আর কিছুই নিয়ে
আসেনি।
হয়তো ঐ ব্যাগের ভিতরেই বাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র
আছে।
জাফর সাহেবকে একটা রুম দেখিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিতে
বললাম।
নীলা আর মাসি খুব যত্ন করে তৈরী করা স্বাধের খাবারগুলো এক
এক করে টেবিলে এনে সাজিয়ে রেখে আবার ভিতরে চলে
গেলো।
জাফর সাহেব ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসলে হরেক পদের খাবার
দেখে আমার স্ত্রীর বেশ প্রশংসা করলেন।
তারপর একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লেন।
ভদ্রলোক আমার বয়সেরই হবে,হয়তো আমাদের দু’জনের
ভিতরে কয়েকবছরের ব্যবধান।
জাফর সাহেব খাবার মুখে দিয়ে বললেন,” আপনার স্ত্রী, সন্তান
ওরা কোথায়? কাউকে দেখছি না যে?”
আমি নীলাকে ডাক দিতেই মাসি আর নীলা দু’জনে দরজার মুখে
এসে দাঁড়ালো।
জাফর সাহেব খাবার খেতে খেতে নীলার দিকে তাকিয়ে
বললো,”আপনি অনেক সুন্দর রান্না করেন,অনেকবছর পর আজ
বাঙ্গালী খাবার খাচ্ছি তাও অনেক তৃপ্তি করে।”
নীলা হেসে জবাব দিলো,”আপনি আসবেন শুনে এই অল্পকিছু
রান্না করা হয়েছে ভাইয়া।আপনার ভাই যদি আমাকে আগে বলতো।
আপনারা বিলেতি মানুষ,আমাদের দেশীয় খাবার তো ভুলেই
গিয়েছেন একবারে।”
জাফর সাহেব বললেন,”এতো খাবার সব আমার জন্য রান্না
করেছেন,আগে জানলে তো দুদিন না খেয়ে থেকে তারপর
আসতাম।”
জাফর সাহেবের কথা শুনে যা বুঝলাম,তিনি খুব মজার মানুষ। সেই
সাথে বেশ ভোজনপ্রিয়।
খাবার খাওয়া শেষ করে জাফর সাহেবকে রুমে বিশ্রাম নিতে
বলে আমি আবরারকে নিয়ে আসলাম।আবরারাকে পেয়ে জাফর
সাহেব আরো বেশি খুশি হলেন।
আবরারের আদর মাখানো কথার ঝুড়িতে জাফর সাহেবকে
আরো বেশি মুগ্ধ করলো।
খুব কম সময়ে দু’জনে অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গেলো।
আমি মনে মনে যা সন্দেহ করেছিলাম,লোকটাকে দেখে
তো সেরকম লাগছে না। ভদ্রলোক বেশ সহজ-সরল আর সাদা
মনের মানুষ।
বিকেলের দিকে একটা জরুরী কাজে বের হওয়ার নাম করে
জাফর সাহেবের সাথে তাঁর বাড়িতে আসার জন্য বার হলাম।
বাড়ির সামনে আসতেই ভদ্রলোক একটাবার পুরো বাড়িটার দিকে
তাকালেন,তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পকেট থেকে চাবিটা
বার করে গেইটের তালা খুললেন।
দীর্ঘদিন গেইটটা বন্ধ হয়ে থাকাতে,সম্পূর্ন খুললো না।
সামান্য সরিয়ে দিয়ে দু’জনে ভিতরে ঢুকলাম।
এক পা এক পা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আর জাফর
সাহেব এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখছে।
হয়তো পুরনো স্মৃতিগুলো আওড়াচ্ছেন তিনি।
বাড়ির সদর দরজার সামনে এসে থমকে দাঁড়ালেন, তারপর আমার
দিকে তাকালেন ভদ্রলোক।
লক্ষ্য করলাম,তার চোখের কোণে জল জমে গিয়েছে।
ভদ্রলোক ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন,” জানেন তো, এই বাড়িটা
আমার অনেক সখের একটা বাড়ি। বাড়িটার প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে
আমাদের স্মৃতি লুকিয়ে আছে।
ঐযে ওখানে আদ্রিতাকে নিয়ে রোজ বিকেলে খেলা
করতাম।
আর আমার স্ত্রী বসে বসে আমাদের বাবা-মেয়ের খেলা
দেখতো।
সব হারিয়ে গিয়েছে,সবকিছুই এখন শুধু স্মৃতি। অনেকবার আসতে
চেয়েছি এইবাড়িটাতে,কিন্তু আসতে মন চায়নি।
কেন যানি মনে হয়,এই বাড়িতেই আমার স্ত্রী আর মেয়ে
আজও লুকিয়ে আছে।
ঐ বেয়াদব কেয়ারটেকার টাকে যদি কোনোদিন চোখের
সামনে পাই,সেইদিনই গুলি করে মারবো তাকে।
আমার স্ত্রীকে নিয়ে ওতো ভাবি না,একজন বেইমানকে নিয়ে
ভেবে কষ্ট পেতে চাইনা আমি,তবে আমার মেয়েটার জন্য
খুব কষ্ট হয়,না জানি কেমন আছে কোথায় আছে মেয়েটা?”
জাফর সাহেবের কথাগুলো শুনে নিজের কাছেই খুব খারাপ
লাগছে,এতো সহজ সরল একজন মানুষকে কিভাবে তাঁর স্ত্রী
এতোবড় একটা ধোঁকা দিলো?
লোকটার আজ সব কিছু থাকলেও তাঁর জীবনে ভালোবাসাটার
বড্ড অভাব।
জাফর সাহেব আবার বললেন, “আপনার গাড়িটা আমাকে দিবেন,আমার
একটু কেনাকাটার দরকার ছিলো।
এসেই যখন পড়েছি,কিছুদিন কাটিয়ে যেতে চায় আপনাদের
সাথে। আবরারের সাথে।”
আমি বললাম,”এভাবে বলছেন কেন,আপনি তো আমার বড়
ভাইয়ের মত।
আপনার যে কয়দিন মন চায়,আপনি থাকবেন। বরং আপনি থাকলে
আমাদেরই আরো ভালো লাগবে।”
জাফর সাহেব হাসলেন,তারপর বললেন,”তাহলে চলুন। দিনের
আলো ফুরানোর আগেই কেনাকাটা করে আসি।
কালকে সকালে বাড়িটা ভালো করে দেখে তারপর বাকি কথা
হবে।”
আমিও আর জোর করলাম না।
দু’জনেই বেরিয়ে আসলাম। তারপর আমার গাড়ির চাবিটা দিয়ে
বললাম,”আমার ড্রাইভার কি যাবে আপনার সাথে?”
“না আমি একাই যেতে পারবো। একটা সময় তো এখানেই থাকতাম
আমি,পথে ঘাট সব পানির মত মুখস্থ আমার।”
কথাটা বলেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো জাফর সাহেব।
সন্ধ্যার একটু পরে জাফর সাহেব ফিরলো।
সাথে দেখলাম আবরারের জন্য গাড়ি ভর্তি খেলনা।
এসব দেখে বললাম,”এসব কি কিনেছেন? আপনি না বললেন
আপনার জন্য কেনাকাটা করবেন?”
“এগুলোই আমার, আবরার আর আমি খেলা করবো এগুলো
দিয়ে।”
বলেই হেসে আবরারের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
আবরার তো নতুন খেলনা পেয়ে মহাখুশি।
ভদ্রলোকের এমন পাগলামি দেখে বেশ খানিকটা কষ্টও
লাগলো। সন্তান হারানো পিতা হয়তো আজকে নতুন
আরেকজনকে সন্তানকে পেয়ে দুঃখটাকে ভুলবার চেষ্টা
করছে।
হয়তো আবরারের ভিতরে তাঁর মেয়েকে খুঁজে
পেয়েছে। সেই জন্যই একটু বেশি আদর করছে।
রাতে খাওয়া দাওয়া করার পর সবাই মিলে অনেক মজা করলাম।
একাকিত্ব কাটাতে পেরে জাফর সাহেব যেন আজকে একটু
বেশিই খুশি,আমাদের সবাইকে পেয়ে।
রাত একটু গভীর হলে জাফর সাহেব বললেন,”আজকে অনেক
কথা-বার্তা হলো।অনেকদিন পর আজ এতো সুন্দর একটা সময় পার
করলাম। আসলেই আপনারা অনেক ভালো। বিশেষ করে ভাবির
হাতের রান্নাটা।
আমি চলে গেলেও হয়তো এগুলো আমার মন থেকে
কখনো হারাবে না।”
কথাবার্তার এক পর্যায়ে আবরার বললো,”মা আমি আজকে নতুন
আংকেলের সাথে ঘুমাবো।”
নীলা বকা দিতে গেলে জাফর সাহেব বললেন,”থাকুক না আমার
সাথে,একটাদিনই তো।
আমারো ভালো লাগবে,আর রাতটাও কেটে যাবে আবরারের
সঙ্গে খুনসুটি করতে করতে।
আবরারকে জাফর সাহেবের সাথে পাঠিয়ে দিয়ে আমরা
আমাদের রুমে চলে আসলাম।
আমাদের রুমের ঠিক অপরপ্রান্তে জাফর সাহেবের থাকার
ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আবরার, জাফর সাহেবের রুমে আছে দেখে দরজার পাল্লা দুটি
এমনিতেই ভিজিয়ে রাখলাম।যাতে করে রাতে আবরারের
আসতে মন চায়লে সহজেই এই রুমে চলে আসতে পারে।
হঠাৎ করে হাল্কা বাতাসে দরজার পাল্লা দুটি নড়ে উঠাতে ঘুম
ভেঙ্গে গেলো আমার।
ঘুম ঘুম চোখে একটাবার দরজা দিয়ে সামনের রুমটাতে তাকাতেই
দেখলাম,সামনের রুমের দরজাটাও খোলা। রুমের ভিতরে
আলো জ্বলছে। হাতঘড়িটার দিকে তাকিয়ে সময়টাকে দেখে
নিলাম একটাবার, রাত দুটো বেজে ত্রিশ মিনিট।
এতো রাতে রুমে আলো জ্বলছে,তাহলে কি জাফর সাহেব
এখনো ঘুমায় নি?
আমি পানি খাওয়ার জন্য উঠে ডাইনিং এ গিয়ে ফেরার সময় রুমে
একটাবার উঁকি দিতেই দেখলাম,রুমে আবরার বা জাফর সাহেব
দু’জনেই কেউই নেই। ভাবলাম হয়তো বেলকনিতে আছে,
বেলকনিতে গেলাম,সেখানেও কেউ নেই। একে একে
পুরো বাড়িতে খুঁজলাম,আবরার আর জাফর সাহেব দু’জনের
কেউই নেই কোথাও।
মনের ভিতরে অজানা একটা ভয় চেপে বসলো।
নীলাকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সদর দরজার
কাছে আসতেই হঠাৎ করে চোখ পড়লো রাস্তার ওপাশে থাকা
বাড়িটার দিকে।
উপরের বেলকনি দিয়ে আলোর রশ্মি ফিকে বের হয়ে
এসেছে খানিকটা।
জাফর সাহেব কি তাহলে ঐ বাড়িতে গিয়েছে আবরারকে নিয়ে।
কিন্তু এতোরাতে ঐ বাড়িতে কি কাজ থাকতে পারে তার,আর তাও
আবার আবরারকে সাথে নিয়ে।
তাহলে কি আবরার আজকেও আবার ঐ বাসার বেলকনিতে কাউকে
দেখেছে?
ভয়টা আরো গাঢ় হতে লাগলো।
কোনোকিছু না ভেবে দ্রুতগতিতে সেদিকে হাঁটা শুরু করে
দিলাম।
বাড়ির গেইটের তালা খোলা,গেইট সরিয়ে ভিতরে ছুটে গিয়ে
সদর দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম।
বাড়ির ভিতরে কে যেন গম্ভীরস্বরে একনাগাড়ে কিছু একটা পাঠ
করে চলেছে।
ভাষাগুলো অনেকটাই অস্পষ্ট।
দরজাতে হাত দিতেই দরজার পাল্লা দুটি দুদিকে ফাঁক হয়ে সরে
গেলো।
দরজা খুলে যেতেই চোখ কপালে উঠলো আমার।
ড্রয়িংরুমের মাঝখানে সারি সারি কতকগুলো কাঠ গোল করে
সাজানো মস্তবড় একটা অগ্নিকুণ্ডে আগুন দাউদাউ করে
জ্বলছে। আর অগ্নিকুন্ডের সামনে দন্ডায়মান একটা ভয়ংকর মুর্তির
পায়ের নিচে বসে আছে একজন তান্ত্রিক। পরণে লাল
কাপড়ের এক টুকরো পোষাক,বলতে গেলে অর্ধনগ্ন
অবস্থাতেই চোখ বন্ধ করে ধ্যানে মত্ত আছে সে।
কপালে লাল-সাদার তিলক লাগানো,গলায় ঝুলছে রুদ্রাক্ষের মালা।
আগুনের আঁচে মুখটা চিনতে খুব একটা কষ্ট হলোনা আমার।
লোকটা আর কেউ নয়,সকালে গাড়ি চড়ে আসা কোর্ট-টাই
পরিহিত সেই ভদ্রলোক, মানে এই বাড়ির মালিক জাফর চৌধুরী!!
একি এই ভদ্রলোক এই বেশভূষা কেন পরেছে,আর এইসবই বা
কেন করছে? আর এই ভয়ংকর মূর্তিটায় বা কোত্থেকে
এলো?
সেদিন যখন এসেছিলাম,তখন তো এসবের কিছুই ছিলো না
এখানে।
তাহলে কি বিকালে তখন কেনা-কাটার নাম করে এইসব জিনিসপত্র
কিনতে গিয়েছিলো লোকটা?
এতো প্রশ্নের মাঝেও যখন দেখলাম ভয়ংকর মূর্তিটার দু পায়ের
মাঝখানে আমার ছেলে আবরার অবচেতন অবস্থাতে পড়ে
আছে,তখন আর নিজেকে শান্ত রাখতে পারলাম না।
ছুটে গিয়ে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললাম,”এইসব কি হচ্ছে? আর আমার
ছেলেকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন? একজন মুসলিম
হয়ে এ কার পূজা করছেন আপনি?”
লোকটা এবার চোখ খুলতেই ভিতরটা ধক্ করে উঠলো আমার।
চোখের মনি দুটো জলজল করে জ্বলছে তার আগুনের মত।
যেন জ্বলন্ত দুটো আগ্নেয়গিরি চোখের মনিতে বসানো
আছে।
আমি ভয় পেলেও দমে না গিয়ে ছুটে গেলাম আবরারকে
নেওয়ার জন্য।
সামনে বসে থাকা লোকটা এবার অকথ্য ভাষাতে গালি দিয়ে আমার
দিকে হাত বাড়াতেই আমি ছিটকে গিয়ে পড়লাম অগ্নিকুন্ডের
একপাশে।
ব্যাথায় ককিয়ে উঠে কোনরকমে আবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে
বললাম,”আমার ছোট্ট ছেলেটা কি ক্ষতি করেছে, তাকে কেন
নিয়ে এসেছেন এখানে?”
লোকটা বজ্রকণ্ঠে বলে উঠলো,”যেখানে স্বার্থ হাসিলের
জন্য নিজের মেয়েকে সমর্পণ করতে একটুও বুক কাপেনি
আমার,সেখানে তোর ছেলে আর এ এমন কি!!
শোন তাহলে, এখানে তুই আমাকে নিয়ে আসিস নি,বরং আমি
নিজে থেকে এসেছি তোর ছেলের জন্য। এই বাড়িতে ঠিক
এইখানে আমার মেয়েকে এভাবে বলি দিয়েছিলাম,আর আমার
স্ত্রী বাঁধা দিতে এসেছিলো দেখে তাকেও খুন করেছিলাম।
আর তারপর তাঁদের দু’জনকে উপরের ঘরের আলমারিতে
ঢুকিয়ে রেখে দোষ চাপিয়ে দিয়েছিলাম বাড়ির কেয়ারটেকার
সুমনের নামে। বেচারা খুব ভালো মনের মানুষ ছিলো,কিন্তু
আমার কাজে যে বাঁধা দিবে তাকেই যে মরতে হবে।
তাই ও বেচারাকেও মরতে হলো।
সবাই ভাবলো,আমার বউ-মেয়েকে নিয়ে সুমন ভেগে
গিয়েছে। আর আমিও নাটক বানিয়ে দেশ ছেড়ে চলে
গেলাম। এতোদিন তো আমার সবকিছু ভালোই চলছিলো,তবে
এখন যে আবার শয়তান মাকে সন্তুষ্ট করতে হবে।
আর তখনি তুই ফোন দিয়ে নিজের ছেলের বিপদ ডেকে
আনলি। আজকে তোদের দু’জনকে শয়তান মায়ের নামে বলি
দিয়ে আমার কার্যসিদ্ধি সাধন করবো। একসাথে জোড়া বোলি
পাবে মা আমার।”
বলেই হাসতে লাগলো লোকটা।
আমি সেদিকে ছুটে যেতে গেলেও যেতে পারলাম না।
মনে হচ্ছে কেউ যেন আমার পা দুটি শক্তকরে মেঝের
সাথে আটকিয়ে ধরে রেখেছে।
লোকটা একমনে মন্ত্র পড়তে লাগলো,আর অগ্নিকুন্ডের
ভিতরে ঘি আর ধুপ ছিটাতে লাগলো।
খানিকক্ষন মন্ত্র পড়ার পর আগুনের ভিতর থেকে একটা
ঝলসানো ছুরি বার করে দাঁড়িয়ে বললো,”মা তোর মনোবাসনা
পূর্ণ হউক সেই সাথে আমারো।
বলেই ছুরিটা আবরারের গলাতে চালাতে যাবে ঠিক তখনি একটা
চিৎকার দিয়ে উঠলো লোকটা।
তাকিয়ে দেখলাম,একজন মহিলা লোকটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
চুলগুলা এলোমেলো হয়ে আগুনের উত্তাপে যেন ছড়িয়ে
ছিটিয়ে আছে চারদিকে।
বজ্রধ্বনিতে সেই নারীকণ্ঠ বলে উঠলো,”তুই নিজের
ইচ্ছাতে আসিস নি এখানে,তোকে আমি নিয়ে এসেছি।”
লোকটা এবার ভয়ে মুচড়ে গিয়ে বললো,”তুমি! না না এ কিভাবে
সম্ভব! তুমি তো মরে গিয়েছো,আমি নিজ হাতে তোমাকে খুন
করেছি।”
নারীকণ্ঠটা হেসে বললো,”ভয় পেওনা,তোমার না
আমাদেরকে ছেড়ে থাকতে ভিষণ কষ্ট হয়,তাই তো
তোমাকেও আমাদের সাথে নিয়ে যেতে এসেছি।
আদ্রিতাও যে অনেকদিন তাঁর বাবার আদর পায়নি। দেখো
দেখো তোমার মেয়েকে দেখো,তোমার আদর পাওয়ার
জন্য কতটা ব্যাকুল হয়ে আছে।”
কথাটা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে সিড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম সেদিনের
সেই ছোট্ট মেয়েটা সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসছে।
গলাতে তীক্ষ্ম সুরির দাগ বসানো।
রক্তের কালচে ছাপে ভয়ংকর হয়ে আছে সেই দাগ।
মেয়েটা নেমে এসে জাফর সাহেবে কাছে গিয়ে
বললো,”বাবা যাবে না আমাদের সাথে। আমার যে তোমাকে ছাড়া
ভিষণ কষ্ট হয় থাকতে বাবা। যাবে না আমাদের সাথে?”
বলেই আরো কাছে এগিয়ে গেলো লোকটার।
জাফর সাহেব এবার প্রাণের ভয়ে পালাতে গেলে নিজেই পা
ফসকে গিয়ে জলন্ত অগ্নিকুন্ডের ভিতরে পড়ে গেলো।
দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা অাগুন ধিরে ধিরে জাফরের শরীর
থেকে মাংস গুলোকে ঝলসে দিতে লাগলো।
জাফরের স্ত্রী আর মেয়ে দুজনে অপলক দৃষ্টিতে সেই
বিভীষিকাময় দৃশ্যটা যেন উপভোগ করছে।
জাফর আর্তনাদ করতে করতে একটা সময় জ্বলন্ত আগুনের
মাঝে হঠাৎ করে হারিয়ে গেলো।এই বিভীষিকাময় গা হীম করা
দৃশ্য যেন আমার চোখ আর নিতে পারছে না।
আমি ছুটে গিয়ে আবরারকে কোলে নিয়ে চলে আসতে
যাবো,তখন জাফরের স্ত্রী বলে উঠলো,”আপনাদের এই
কয়দিন অনেক কষ্ট দিয়েছি। আসলে আপনাদেরকে আমাদের
অস্তিত্বটাকে বুঝাতে চেয়েছিলাম। এতবছর সবার কাছে মিথ্যে
বদনাম নিয়ে মরে যাওয়ার পরও একমূহুর্ত শান্তিতে থাকতে পারিনি
আমরা মা-মেয়ে। যে মানুষটাকে আমি অন্ধ্যের মত
ভালোবেসেছিলাম,সেই মানুষটাই কিনা মানুষ নামের নরপিশাচ
ছিলো। লন্ডনের একটা ছোট্ট শহরে শয়তানের পূজা এখনো
চলে,নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রতিবার একটা করে নবজাতক
শিশুর বোলি দিতে হয়। বিনিময়ে সে যায় চায় তাই পায়। আমার
স্বামীও লোভের তাড়নাতে এতটাই অন্ধ্য হয়ে গিয়েছিলো
যে শেষমেষ মুসলিম ধর্মের হওয়ার পরও শয়তানের পূজো
শুরু করে।
লন্ডনে কাজটা করা রিস্কি ছিলো,তাই সে ঠিক করে এইখানে
একটা বাড়ি বানিয়ে বাড়ির ভিতরেই সে এই কর্মকান্ড গুলো করবে।
আর বোলি শেষে মৃত লাশগুলো বাগানের কুয়োতে
ফেলে দিবে।কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাবেনা। আর সেইজন্য
যখনি ওর কাউকে বোলি দেওয়ার প্রয়োজন পড়তো তখনি এই
বাড়িটাতে এসে একটা করে বোলি দিয়ে আবার ফিরে যেতো
আমাদেরকে নিয়ে। এসব দেখেও চুপ ছিলাম,শুধু ভালোবাসতাম
দেখে।
কিন্তু যখন শুনলাম,আমাদের নিজের মেয়েকে বোলি
দিবে,তখন আর মা হয়ে আমি চুপ থাকতে পারিনি। আর সেদিনের
সেই বাধা দেওয়াতেই একসাথে আমাকে আর আদ্রিতাকে খুন
করে ঐ নরপিশাচটা।
আমাদের দু’জনকে মেরে ঐ নরপিশাচটা আলমারিতে ঢুকিয়ে
রেখেছিলো। তিলে তিলে আমাদের শরীরটা পঁচে গলে
নষ্ট হয়েছে।
কাঠপোকা এসে খুবলে খুবলে খেয়েছে আমাদের
ফেলে যাওয়া শরীরের মাংসগুলা।
আর সেইজন্যই আমাদের মুক্তি হয়নি। তবে আজ থেকে আমরা
মুক্ত।
আজ থেকে আর কেউ আপনাদের বিরক্ত করবেনা। আমাদের
কাজ শেষ,আর কাউকে কখনো এ বাড়িতে দেখতে পাবেন না।”
“জাফর তার প্রাপ্য শাস্তি পেয়েছে। তবে মানুষ অর্থসম্পদের
মোহে পড়ে যে এতটা পিশাচ হয়ে যেতে পারে,তা এই
লোকটাকে না দেখলে কখনো জানতেই পারতাম না।
ঐ বদমাশ লোকটা আপনার সম্পর্কে এমনভাবে মিথ্যা গুজব
ছড়িয়েছে এলাকার মানুষের কাছে,যে কেউ শুনলেই সে
আপনাদেরকেই দোষারোপ দিবে। এমনকি আমি নিজেও প্রথম
শুনে আপনাকে কতকিছুই না মন্দ বলেছি। “
কথাগুলো বলে আবরারকে নিয়ে চলে আসছিলাম,এমন সময়
পিছন থেকে ছোট্ট মেয়েটা বলে উঠলো,”আমি কিন্তু
আবরারের সঙ্গে মাঝেমাঝে খেলতে আসবো।”
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে হেসে বললাম,”এসো।”
তারপর আবরারকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
নীলা এখনো ঘুমাচ্ছে,আবরারকে মাঝখানে রেখে
রোজকার মত আরেকপাশে আমি শুয়ে পড়লাম আমি।
পরদিন সকালে
“এই আশিক,জাফর ভাইয়া কোথায়?”
“তোমার জাফর ভাইয়া তো সেই ভোরে উঠেই চলে
গিয়েছে। কি যেন একটা কাজ পড়ে গিয়েছে,তাই আর থাকতে
পারলো না।”
“একটাবার বলে তো যেতো,আমি সারারাত ধরে কতকিছু ভেবে
রেখেছি,নতুন নতুন রান্না করবো বলে।”
বিড়বিড় করে বললাম,”
তুমি সারারাত রান্নার রেসিপি ভাবছিলে,আর আমরা বাপ ছেলে ভূতের
সাথে কুতকুত খেলছিলাম।”
“কি বললা?”
“কোই কিছু না তো,আচ্ছা জাফর নেই তো কি হয়েছে,একটাদিন
নিজের স্বামীকেই না হয় ভালো মন্দ রেঁধে খাওয়াও একটু।”
নীলা চোখ উল্টিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলে, আমি
আবরারের দিকে তাকালাম।
আবরার এখনো ঘুমাচ্ছে। ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে
বললাম,”রাতে এতোকিছু ঘটে যাওয়ার পরও ছেলেটা কিভাবে
ঘুমাচ্ছে দেখো।”
কথাটা বলে আবরারকে জড়িয়ে ধরে আবার ঘুমালাম।
সমাপ্ত….


তো আজকে এই পর্যন্তই । মানুষ মাত্রই ভুল হয় । তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আপনি চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে join করতে পারেন । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন ।



The post নিয়ে নিন চমৎকার একটা ভৌতিক গল্প [শেষ অংশ] appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/PMN7yIf
via IFTTT