আমি কিভাবে এসইও করি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরলাম।
আমরা বাঙ্গালী, স্বভাবগতই অলস প্রকৃতির। আমরা সব কিছুতেই সর্টকাট খুজি, এমন কি সফলতারও সর্টকাট খুজি। কিন্তু কি-বোর্ডের সর্টকাট এর মাধ্যমেও সফলতা সম্ভব।
ইনশাআল্লাহ আমি কি-বোর্ডের সর্টকাট দিয়েই সফলতা পেয়েছি। প্রথমত আমি একজন প্রফেশনাল ফ্রিলান্সার। ফ্রিল্যাসিং মার্কেটপ্লেস WordPress এবং SEO বিশেষজ্ঞ হিসেবে ৩ বছর থেকে আজ করতেছি
এছাড়াও ব্লগার হিসেবে আমি আমার উয়েবসইট এ অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে ধারনা দেওয়া চেষ্টা করতেছি। আমার ব্যান্ডিং নাম websoriful
অনেক নতুন ব্লগার ভাইয়েরা ইদানিং দেখছি আপনারা হতাস হয়ে ফেজবুকে পোস্ট করেন। কেউ কেউ পোস্ট করেছেন–
বিভিন্ন কারনে এডসেন্স এপরুভ পাচ্ছেন না, কিওয়ার্ড যাচাই-বাচাই. কন্টেন্ট ইনডেক্স হচ্ছে না, এফিলিয়েট সাইট র্যাংক হচ্ছে না, ফাইবারে ২ বছর যাবৎ লেগে আছেন তবুও কাজ পাচ্ছেন না, পেলেও সঠিক স্কিল এর অভাবে কেউবা কাজ হারাচ্ছেন ইত্যাদি।
সব কিছুর মূলে বলবো আপনাদের সঠিক ভাবে স্কিল ডেভলপ করুন। প্রচুর প্রাকটিস করুন। বিশেষ ভাবে বলবো SEO ভাল ভাবে আয়ত্ব করুন।
কারন SEO ছাড়া আপনি ব্লগিংয়ে কোথাও সফল হতে পাবেন বলে আমার মনে হয় না। SEO এমন কিছু যা সঠিক ভাবে আয়ত্ব করতে পারলে সফলতার স্বর্ণ শিখরে আরোহন করা সম্ভব।
এখন চলুন এসইও বিষয়ে কিছু জেনে নেয়া যাক।
এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেটির মাধ্যমে যেকোন ওয়েব পেজ শত শত কিওয়ার্ডের জন্যে সার্চ ইঞ্জিনে টপে জায়গা নিয়ে থাকে, যাকে আমরা র্যাংক বলে থাকি।
আপনাদের মনে এখন প্রশ্ন হতে পারে,
এসইও কি ?
এসইও এর পূর্ণরূপ হচ্ছে “সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন”। সহজ কথায় আমরা যখন গুগল এ কোন কিছু লিখে সার্চ দিই, তখন গুগল কতগুলো রেজাল্ট দেখায়। সেখান থেকে আমরা আমাদের পছন্দমত লিংকে ক্লিক করে আমার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আমাদের দরকারি তথ্য খুঁজে পাই। আর যেই কারণে গুগল কিংবা কোন সার্চ ইঞ্জিন ওই রেজাল্টগুলো দেখায়, সেই কারণ কিংবা পদ্ধতিকে বলা হয় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
আপনাদের মনে আরেকটা প্রশ্ন আসতে পারে তা হলো
এসইও কেন দরকার ?
মনে করুন, আপনার একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট আছে, যেখানে আপনি *”মেয়েদের থ্রি-পিস কাপড় বিক্রি করেন। এখন আপনি অবশ্যই চাইবেন যে গুগলে কেউ যখন বিবাহিত নারীদের থ্রি-পিস লিখে সার্চ দিবে তখন যেন গুগলে আপনার ওয়েবসাইটকেই প্রথমে দেখায়। তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের লিংকে ক্রেতারা এসে আপনার পণ্যটি কিনবে।
এখন এইযে পুরো প্রক্রিয়া যেটার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল “মেয়েদের থ্রি-পিস” এই কিওয়ার্ডের জন্যে দেখাবে সেটাই আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভাষায় এসইও বলে থাকি।
এসইও’র এর মৌলিক বিষয় কি কি ?
SEO এর মৌলিক বিষয়গুলো আমি সাধারণত ৫ টি ধাপে বিভক্ত করেছি। নিচে তা দেওয়া হলো:
- কম্পিটিটর এনালাইসিস
- কিওয়ার্ড রিসার্চ
- ব্যাকলিংক
- ভিজিটর এনালাইটিক্স
- সার্চ ইঞ্জিন রোবোট
১. কম্পিটিটর এনালাইসিস:-
প্রথমে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের এনালাইসিস করতে হবে। কারন আপনাকে তো আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলেই গুগল সার্চ এ প্রথম স্থান অর্জন করতে হবে। তাই কম্পিটিটর এনালাইসিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কম্পিটিটর এনালাইসিস করার জন্য আপনার যে কাজগুলো করতে হবে তা নিচে দেওয়া হলো:
- Content Quantity,
- Focus Keyword,
- LSI Keyword,
- Backlink,
- DA/PA etc.
আপনার উয়েবসইট এ এই কাজ গুলো আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে ভালোভাবে করতে হবে
২. কিওয়ার্ড রিসার্চ:-
প্রথমে আপনার টার্গেট কিওয়ার্ড খুঁজে বের করতে হবে। কিওয়ার্ড রিসার্চ এর সময় সার্চ ভলিয়ম ইত্যাদি আরো অনেক কিছু দেখতে হবে। আপনার টার্গেট কিওয়ার্ড দিয়ে বর্তমানে কারা গুগল প্রথম পৃষ্ঠায় আছে, এগুলো খুঁজে বের করে তাদেরকে পেছনে ফেলতে হবে।
- Keyword search volume,
- Keyword difficulty,
- keyword quantity,
- LSI Keyword,
- KGR Keyword etc.
৩. ব্যাকলিংক:-
উয়েবসইট রেংকিং এর ক্ষেত্রে ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আগে তার যত বেশি ব্যাকলিংক হত, গুগল রেংকিং এ সে তত এগিয়ে থাকতো। তবে বর্তমানে এমনটা নাই। তবে এখনো কোয়ালিটি ব্যাকলিংক এর গুরুত্ব অনেক বেশি।
নিচে ব্যাকলিংক এর কিছু প্রকারভেদ দেওয়া হলো:
- Anchor Text,
- Blog Comment,
- Forum Posting,
- Guest Posting,
- Profile Backlink,
- Social Bookmarking,
- Web 2.0 etc.
৪. ভিজিটর এনালাইটিক্স:-
- Find Search Engine,
- Detect Keyword,
- Visitor Bounce Rate,
- Visitor Time Spend etc.
৫. সার্চ ইন্জিন রোবোট:-
- ক্রলার,
- ইনডেক্সার,
- স্পাইডার
এসইও’র প্রকার ভেদ:-
এসইও এর ভালো খারাপ প্রকারভেদ হিসেবে এসইওকে ৩ভাগে ভাগ করা হয়। নিচে তা দেওয়া হলো:
- ক. ব্ল্যাক হ্যাট এসইও
- খ. গ্রে হ্যাট এসইও এবং
- গ. হোয়াইট হ্যাট এসইও
ক. ব্ল্যাক হ্যাট:-
অবৈধ পন্থায় সাইটে ভিজিটর নিয়ে আসাকে বলা হয় ব্ল্যাক হ্যাট এসইও। আপনি জানলে অবাক হবেন কারন, ব্ল্যাক হ্যাট টেকনিক ফলো করেও যেকোনো ওয়েবসাইটে র্যাংকে নিয়ে আসা সম্ভব।
যদি আপনি এই ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করে ভিজিটর আনতে চান। তাহলে আপনাকে যে কাজগুলো করতে হবে,
- * কিওয়ার্ড স্টাফিং
- * ক্লিকবেট টাইটেল
- * অজস্র ব্যাকলিং
খ. গ্রে হ্যাট এসইও:-
এসইও সেক্টরে ভালো এবং খারাপের মাঝামাঝি যে নিয়ম আছে, তাকে বলা হয় গ্রে হ্যাট এসইও। বেশিরভাগ ব্লগার বা এসইও এক্সপার্টরা এই গ্রে হ্যাট এসইওকে পছন্দ করে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, “গ্রে হ্যাট এসইও এর কোনো সাইড ইফেক্ট নেই?”
হুমম, গ্রে হ্যাট টেকনিকেরও ব্যাপক সাইড ইফেক্ট রয়েছে। তবে একটা কথা আছেনা, “চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পড়ো ধরা”।
গ. হোয়াইট হ্যাট এসইও:-
এসইও এর যতো টেকনিক আছে, তার মধ্যেও সবচেয়ে Safe এবং legal হলো হোয়াইট হ্যাট এসইও। আর আপনি যখন হোয়াইট হ্যাটের সবগুলো টেকনিক সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। তখন আপনিও নিজেকে একজন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে দাবী করতে পারবেন।
আমি উয়েবসইট এ কিভাবে এসইও করবো:-
আপনি আপনার উয়েবসইট এ সাধারণত দুভাবে SEO করতে পারবেন। নিচে তা দেওয়া হলো:
- ক. অর্গানিক এসইও এবং
- খ. পেইড এসইও।
ক. অর্গানিক এসইও:-
যখন আপনি বিভিন্ন টেকনিক অবলম্বন করে সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসবেন। তখন ভিজিটর নিয়ে আসার সেই উপায়কে বলা হয় অর্গানিক এসইও।
খ. পেইড এসইও :-
আপনি পেইড এসইও করার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন। তাহলে আপনাকে বিপুল পরিমানে অর্থ ব্যয় করতে হবে।
অর্গানিক এসইও’র প্রকারভেদ:-
- ক. অন পেজ এসইও
- খ. অফ পেজ এসইও
- গ. টেকনিক্যাল এসইও
ক. অন পেজ এসইও:-
অনপেজ এসইও করার জন্য আপনাকে যে কাজগুলো করতে হবে তা হচ্ছে—
- Title optimize,
- Meta tag,
- Optimise Description,
- SEO Friendly Content,
- Keyword research,
- Keyword placement,
- LSI keywords,
- Content Longer,
- Tag,
- Category,
- Menu placement,
- Https,
- SSL Certificate,
- Robots.txt etc.
খ. অফ পেজ এসইও:-
অফপেজ এসইও করার জন্য কোন টেকনিক গুলো ফলো করবেন.
- Anchor Text,
- Blog Comment,
- Forum Posting,
- Guest Posting,
- Profile Backlink,
- Social Bookmarking,
- Web 2.0 etc.
**গ. টেকনিক্যাল এসইও:- **
এমন কিছু বিষয় রয়েছে৷ যেগুলো টেকনিক্যাল এসইও এর আওতায় পড়ে। বিষয়গুলো হলো..
- Sitemap & Robots.txt file upload,
- Crawler error fixing,
- Duplicate content,
- 301 redirects,
- URL structure,
- SSL certificate,
- Website structure & Design,
- Page Loading speed,
- Mobile Usability etc.
৭. এসইও করার টুলস:-
অনলাইনে SEO করার জন্য ২ ধরনের টুলস পাবেন।
- ক. পেইড টুলস
- খ. ফ্রী টুলস
ক. পেইড টুলসের কি কি:-
এই টুলস গুলোর কোনো ফ্রি ভার্সন নাই। তাই আপনাকে তাদের সার্ভিস কিনে ব্যবহার করতে হবে।
- SEO Spider,
- Ahrefs,
- SEMrush,
- Moz Pro,
- KWFinder,
- Searchmetrics,
- Yoast SEO etc.
খ. ফ্রি টুলস কি কি:-
নিচের SEO টুলস গুলোর সাথে আপনি আপনার উয়েবসইট এর SEO এর জন্য কাজ করতে পারবেন। তাদের ফ্রি ভার্সন আছে আবার পেইড ভার্সনও আছে।
- Google Analytics,
- Google Trands,
- Search Console,
- Keyword Hero,
- Screaming Frog,
- SEOlyzer,
- Answer The Public,
- Keyword Planner,
- Keyword Surfer,
- Ubersuggest etc.
এ পর্যন্ত যা লিখছি তা আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। সময় স্বল্পতার কারনে সংক্ষেপে লিখলাম। আশা করছি নতুনদের জন্য উপকারী হবে। ভুল-ত্রটি মার্জনীয়।
SEO বা অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমার উয়েবসইট ভিজিট করুন। ফেসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদ
The post আমি যেভাবে উয়েবসইট SEO করে গুগল প্রথম পৃষ্ঠায় আনি appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/3HZcoty
via IFTTT