স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে খুলবেন? এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো জেনে নিন

পৃথিবীর সকল দেশেই স্টুডেন্টদের জন্য আলাদা ব্যাংকিং সিস্টেম রয়েছে। ঠিক তেমনি বাংলাদেশেও স্টুডেন্টদের জন্য এই সুবিধা অনেক ব্যাংক প্রোভাইড করে।

সেভিংস একাউন্ট থেকে স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্টে অনেক সুবিধা থাকায় এই ব্যাংক একাউন্ট শিক্ষার্থীদের মাঝে খুবই জনপ্রিয়। তবে এই ব্যাংক একাউন্টের কিছু অসুবিধাও আছে। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে আসি…

• স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যা যা লাগবে:
১. যেকোনো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইডি কার্ডের ফটোকপি।
২. শিক্ষার্থীর একাডেমিক মাকশিট বা ট্রান্সক্রিপ্ট এর ফটোকপি।
৩. জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র (যদি থাকে)। যদি জন্ম নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি অন্য কারো নামে অ্যাকাউন্টটি করতে হবে। যার জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয় পত্র আছে।
৪. পাসপোর্ট সাইজের ছবি এক বা দুই কপি।
৫. নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং এককপি ছবি (আপনার অবর্তমানে যে ব্যক্তি আপনার অ্যাকাউন্টের দায়িত্ব নেবে)।
৬. ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে (ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল)। তবে আপনি ইসলামী ব্যাংকে ১০০ টাকা দিয়ে একাউন্ট খুলতে পারবেন। কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা লাগবে।

• স্টুডেন্ট একাউন্ট কিভাবে খুলবেন:
স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলা একেবারে সহজ। উপরের যেসব কাগজপত্র গুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে ব্যাংকে যাবেন। সেখানে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আপনি যদি স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার কথা বলেন, তাহলে তারা আপনাকে একটি ফরম দিবে। সেটা আপনি সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিলেই আপনার একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।

• স্টুডেন্ট একাউন্ট এর সুবিধা:
১. স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট এর কোন ধরনের চার্জ না থাকায়, সম্পূর্ণ ফ্রিতেই ব্যাংকিং করা যায়।
২. অল্প কিছু টাকা জমা করে একাউন্ট একটিভ করা যায়।
৩. ফ্রিতে এটিএম কার্ড ব্যবহার করা যায়। তবে কিছু কিছু ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট এ এটিএম কার্ড প্রোভাইড করে না, কিন্তু চেক পাবেন।
৪. বাৎসরিক কোন সার্ভিস চার্জ দিতে হয় না।
৫. আপনি একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট থেকে প্রায় ২৫,০০০ টাকা ফ্রিতে উত্তোলন করতে পারবেন (ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল)।
৬. শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ফি প্রদান করতে পারবেন।
৮. গুগল এডসেন্স এর টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
৯. যেকোনো ধরনের রেমিটেন্স আনতে পারবেন।
১০. কেনাকাটার বিল প্রদান করতে পারবেন।
১১. অনলাইন ব্যাংকিং ফ্রিতে পাবেন (ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল)।
১২. স্টুডেন্ট একাউন্ট থেকে পরবর্তীতে সেভিং একাউন্টে রূপান্তর করতে পারবেন।

এছাড়া আরো অনেক ধরনের সুবিধা স্টুডেন্ট একাউন্ট এর রয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল। যে ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলবেন, সে ব্যাংক থেকে অবশ্যই বিস্তারিত জেনে নিবেন।

• স্টুডেন্ট একাউন্ট এর অসুবিধা:
১. স্টুডেন্ট একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বেশি উত্তোলন করতে পারবেন না।
২. স্টুডেন্ট একাউন্ট এ লেনদেনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা (ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল)।
৩. কিছু ব্যাংকে এটিএম কার্ড অথবা চেক পাবেন না।
৪. স্টুডেন্ট একাউন্ট এর একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকবে। সেটা আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইডি কার্ডের মেয়াদ অনুযায়ী।

• কোন ব্যাংক থেকে স্টুডেন্ট একাউন্ট করবেন:
বাংলাদেশের যে কোন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেই আপনি স্টুডেন্ট একাউন্ট করতে পারবেন। বাংলাদেশ সরকারের অধিভুক্ত প্রায় ৫০টি ব্যাংক রয়েছে। যেমন: ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ইত্যাদি।

তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি স্টুডেন্ট একাউন্ট ব্যবহৃত হয় ইসলামী ব্যাংক এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের। কারণ এ দুটি ব্যাংকের অনেক এটিএম বুথ আছে। যার ফলে আপনি যেকোন জায়গা থেকে এটিএম এ টাকা উঠাতে পারবেন।

আপনার যাতায়াতের সুবিধা অনুযায়ী আপনি ব্যাংক নির্ধারণ করুন।

পরিশেষে, একজন শিক্ষার্থীর জন্য স্টুডেন্ট একাউন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্টুডেন্ট একাউন্ট এ কোন ধরনের চার্জ না থাকায়, আপনি ফ্রিতে একাউন্টের লেনদেন সহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। তাই আপনি চাইলে স্টুডেন্ট একাউন্ট করতে পারেন।

তবে স্টুডেন্ট একাউন্ট এর লিমিট এ আমার মনে হয় কোন সমস্যা হবে না। কারন বেশি ভাগ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্টে প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা লেনদেন করতে দেয়। আর একজন স্টুডেন্ট এর জন্য প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা লেনদেন যথেষ্ঠ বলে আমি মনে করি।

সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

আমার ফেসবুক প্রোফাইল

The post স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে খুলবেন? এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো জেনে নিন appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/2ielp05
via IFTTT

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট