আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আল্লাহর অশেষ রহমতে আশা করি আপনারা সকলে অনেক ভাল আছেন।
আমি আজ আপনাদের মাঝে ইতালির ভিসা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরবো।
চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
যারা যারা ইতালিতে যাওয়ার কথা ভাবছেন অথবা ভবিষ্যতে যাবেন তাদের জন্যই আজকের এই পোস্টটি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে ইতালির দুই প্রকার ভিসা সম্পর্কে আলোচনা করব।
ভিসা দুইটি হলো:
- স্পন্সর ভিসা (Sponsor visa)
- কৃষি ভিসা (Agriculture visa)
চলুন প্রথমে জেনে নেই স্পন্সর ভিসা সম্পর্কে।
১. স্পন্সর ভিসা (Sponsor visa):
আমাদের পছন্দের তালিকায় সবসময়ই ইতালি দেশটি থাকে। এখন চলুন জেনে নেই স্পন্সর ভিসাতে ইতালিতে গেলে কি সুবিধা বা অসুবিধা হতে পারে!
সুবিধা:
১. বৈধভাবে ইতালিতে যাওয়া যায়।
২. ইতালিতে গিয়ে কাজ পেতে কোন সমস্যা হয় না।
৩. ইতালিতে যাওয়ার পর পছন্দ অনুযায়ী কাজ করা যায়।
৪. ইতালি থেকে নিজের দেশে যাতায়াতে কোন প্রকার সমস্যা হয় না।
৫. পরিবারের সদস্যদের ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে।
৬. এক্ষেত্রে ইতালিতে থাকা অবস্থায় আপনি যদি অসুস্থ হয়ে যান তাহলে আপনার চিকিৎসার খরচ ইতালিত সরকার বহন করবে।
৭. ইতালির নাগরিকত্ব পাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ থাকে।
৮. যেকোনো মালিকের অধীন কাজ করতে পারবেন।
৯. নিজ দায়িত্বে জায়গা ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।
অসুবিধা:
১. টাকার পরিমাণ অনেক বেশি । যা আমাদের পছন্দ নাও হতে পারে।
২. স্পন্সর ভিসায় গেলে ১৬-১৮ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
(বি: দ্র: স্পন্সর ভিসায় টাকা বেশি লাগলেও ঝুঁকি অনেক কম)
চলুন এবার জেনে নেই কৃষি ভিসা সম্পর্কে।
২.কৃষি ভিসা (Agriculture visa)
কৃষি ভিসা(Agriculture visa) মূলত ৬ মাস বা ৯ মাস মেয়াদের হয়ে থাকে। যে ভিসা কে আমরা সিজনাল ভিসা (seasonal visa) বলে থাকি।(এ ভিসাতে যাওয়ার জন্য আবেদন করতে এক লক্ষ টাকা লাগবে এবং এক মাস থেকে এক বছর ছয় মাস পর্যন্ত সময়ের ভিতর আপনি জানতে পারবেন আপনার কৃষি ভিসা আসছে নাকি আসে নাই) ।চলুন এবার জেনে নেই কৃষি ভিসার সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে।
সুবিধা:
১. এ ভিসায় শুধুমাত্র ১০-১১ লক্ষ টাকা হলেই ইতালিতে যাওয়া যায়।
২. শুধুমাত্র ৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়।
৩. এই ভিসাতে পারিশ্রমিক ঘণ্টায় ৪-৬ ইউরো ধরা হয়। (অর্থাৎ ৫ ইউরো ধরা হলে আপনার বেতন হবে ৫×৮=৪০ ইউরো)
৪. যেকোনো মালিকের অধীন কাজ করতে পারবেন।
অসুবিধা:
১. এই ভিসাটা শুধুমাত্র ৬ বা ৯ মাস মেয়াদী হয়। অর্থাৎ আপনার ইতালিতে যাওয়ার পর ছয় বা নয় মাসে শুধুমাত্র আপনি বৈধ হিসেবে থাকবেন।
২. আপনি ইতালিতে যাওয়ার পর যদি আপনি যে মালিকের অধীনে কাজ করবেন সে যদি ভালো না হয়। তাহলে আপনাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে।
৩. কখনো এমনও হয় কৃষি ভিসাতে গিয়ে কোন মালিক খুঁজে পাওয়া যায় না।
৪. কৃষি ভিসাতে আপনি যদি ইতালিতে যান তাহলে আপনি আপনার পরিবারকে নিয়ে যেতে পারবেন না।
৫. মাঝে মাঝে এমনও সমস্যা হয় আপনি কোন কাজই খুঁজে পাবেন না।
এখন চলুন বলি, ইতালিতে কৃষি ভিসায় মানুষ এতগুলো টাকা খরচ করে কেন যায়?
ইতালিতে ১০-১১ লক্ষ টাকা ব্যয় করে শুধুমাত্র ছয় বা নয় মাসের জন্য গিয়ে তাদের যাওয়ার খরচটুকু তুলতে পারে না। এ ভিসার নিয়ম হচ্ছে মেয়াদ শেষে দেশে চলে আসতে হবে। কিন্তু ৯৯% মানুষই দেশে ফিরে আসে না। তারা ইতালিতেই থেকে যায়। এখন আপনার মনে হতে পারে, কিন্তু কেন তারা ইতালিতে থাকে?
ইতালিতে কৃষি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও আপনার ডকুমেন্ট পুনরায় তৈরি করে ইতালিতে বৈধ হয়ে কাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার একজন মালিকের দ্বারা আবেদন করতে হবে একজন উকিলের সাহায্যে। এক্ষেত্রে কিছু টাকা খরচ হবে।
এখন কথা হচ্ছে আপনারা যদি কৃষি ভিসায় যান তাহলে অবশ্যই মাথায় রাখবেন, যে দালালের মাধ্যমে বা এজেন্সির মাধ্যমে আপনি ইতালিতে যাবেন তার সাথে ভালোভাবে কথা বলে নিতে হবে যে তারা কি কোন মালিকের মাধ্যমে আপনার ডকুমেন্ট তৈরি করে দিতে পারবে কিনা। আপনি যদি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারেন তাহলেই কৃষি ভিসাতে যাবেন।আশাকরি সকলে বুঝতে পেরেছেন।
(আমার ব্যক্তিগত মতামত: আমি বলব আপনারা স্পন্সর ভিসাতেই ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।)
আপনারা যদি আরও কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
কারো যদি স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
The post ইতালির ভিসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/IvKcSdi
via IFTTT